ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, গ্রেপ্তার আসামি থানা হেফাজতে আত্মহত্যা করলে পুলিশ এর দায় এড়াতে পারে না।
আজ সোমবার ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
এক মাসের মাথায় আবারও হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এবার ঘটনার শিকার চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (এফডিসি) ফ্লোর ইনচার্জ আবু বক্কর সিদ্দিক। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার হেফাজত থেকে গতকাল রোববার ভোররাত ৪টার দিকে পুলিশ তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। নিবন্ধন খাতায় লেখা হয় ‘ব্রট ডেড’ (মৃত অবস্থায় আনা)। স্বজনদের অভিযোগ, আবু বক্কর সিদ্দিককে পুলিশি হেফাজতে হত্যা করার পর পুরো ঘটনা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভাপতি ডিএমপি কমিশনার জানান, এ ঘটনায় কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, গতকাল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই মৃত্যু আত্মহত্যা বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে আবু বক্করের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে ‘গলায় ফাঁস লাগাইয়া মৃত্যু হয়েছে মর্মে ধারণা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন সুরতহাল প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেন।
আজ বিকেল চারটার দিকে আবু বক্করের লাশের ময়নাতদন্ত শেষ হয়। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বলেন, নিহত ব্যক্তির গলায় কালো দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তাঁর মাথা ও পায়ে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে এই আঘাত তাঁর মৃত্যু হওয়ার মতো নয়। মৃতদেহ থেকে ভিসারা ও গলা থেকে নেকটিসু সংগ্রহ করা হয়েছে।
গত ১৬ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় আলমগীর হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে গ্রেপ্তার ও টাকা না দেওয়ায় বেদম মারধরের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় কারাগারে নেওয়ার এক দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় আইন ও সালিশ (আসক) কেন্দ্রের সহযোগিতায় আলমগীরের স্ত্রী মোসাম্মৎ আলো বেগম মহানগর দায়রা জজ আদালতে অভিযোগ করেছেন।