তিন বিষয়ে অকৃতকার্যদের পরবর্তী বর্ষে ‘প্রমোশন’ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত রাজধানীর সাত সরকারি কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। তবে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, দুয়ের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমোশন দিতে নতুন করে ভাবার সুযোগ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর সাত কলেজের প্রমোশনের নিয়ম পাল্টেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নতুন নিয়মে পরীক্ষার খাতার যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়ায় তাঁরা গণহারে অকৃতকার্য হচ্ছেন।
আন্দোলনের মুখে গত মাসের শেষে সাত কলেজের প্রশাসন স্নাতক (সম্মান) প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে সর্বোচ্চ দুই বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমোশনের সুযোগ দেয়। কিন্তু এখন তিন বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা প্রমোশন চাইছেন।
গত ২৬ ডিসেম্বর দুই বিষয় পর্যন্ত অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত যখন হয়, তখন সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন মুহাম্মাদ আবদুল মঈন। ৪ জানুয়ারি মুহাম্মাদ আবদুল মঈনকে সরিয়ে এ এস এম মাকসুদ কামালকে এই দায়িত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
প্রমোশনের দাবিতে রাজধানীর পুরান ঢাকার কবি নজরুল সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে গতকাল রোববার তিন বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এই কর্মসূচির কারণে সাত কলেজের সমন্বয়ক ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকারসহ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে রাত ১০টার দিকে তাঁরা কলেজ থেকে বের হতে সক্ষম হন।
আন্দোলনকারী এসব শিক্ষার্থীর বক্তব্য হলো, সাত কলেজের ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ফলাফল করোনার কারণে পরীক্ষার ১১ মাস পরে প্রকাশিত হয়েছে। অনেকের ফল খারাপ হওয়ায় এখন তাঁরা পরবর্তী বর্ষে প্রমোশন পাচ্ছেন না। এ কারণে তাঁদের একটি বড় ধরনের সেশনজটে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই তিন বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাঁরা বিশেষ বিবেচনায় প্রমোশন চান।
এমন পরিস্থিতিতে আজ সোমবার দুপুরে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে সাত কলেজের প্রধান সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বললেন, ‘সাত কলেজের দুই বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পরবর্তী বর্ষে প্রমোশনের সিদ্ধান্ত আমি প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নেওয়া হয়েছে। তিন বা ততোধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের এই সুযোগ দেওয়া হয়নি। সাত কলেজের অধ্যক্ষ ও সাত কলেজের দায়িত্বে থাকা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা বিশ্লেষণ করেই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুতরাং এ বিষয়ে নতুন করে ভাবনার কোনো অবকাশ নেই। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পুনঃ ভর্তির সুযোগ রয়েছে।’
দেরি করে ফল প্রকাশের অভিযোগের বিষয়ে মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে শিগগিরই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।