২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। এতে বেরিয়ে আসে অনেক ক্লাবের অন্ধকার জগতের ভয়ংকর নানা দিক।
দীর্ঘদিন ধরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবে খেলার আড়ালে জুয়া, ক্যাসিনো চলছিল। দেখেও দেখছিল না কেউ। অবশেষে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরেরপুল এলাকায় ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে প্রথম ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একই দিন অভিযান চলে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রে। উন্মোচিত হতে থাকে ঢাকার ক্লাবপাড়ার অন্ধকার জগতের ভয়ংকর নানা দিক।
২০ সেপ্টেম্বর কলাবাগান ক্রীড়া চক্র ও ধানমন্ডি ক্লাব এবং ২২ সেপ্টেম্বর আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ, দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব, ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবেও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলে। জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন খেলায় নিয়মিত অংশ নেওয়া এমন ৯টি ক্লাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলে। বেরিয়ে আসে খেলার নামে ক্লাবগুলোর অবৈধ কর্মকাণ্ডের অজানা অধ্যায়। তাৎক্ষণিকভাবে পুরো সিলগালা করে দেওয়া হয় ইয়ংমেনস, ওয়ান্ডারার্স, মুক্তিযোদ্ধা ক্লাব, আরামবাগ, দিলকুশা ও ভিক্টোরিয়া ক্লাব। মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের ক্যাসিনো খেলার মিলনায়তন এবং ধানমন্ডি ক্লাবের বার সিলগালা করে দেওয়া হয়।
দুই বছর আগে ক্লাবপাড়ায় ক্যাসিনো–কাণ্ডের অন্যতম হোতা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী (সম্রাট), মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ময়নুল হকসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ, র্যাব ও দুদক পৃথকভাবে মোট ৫৭টি মামলা করে। তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ৪২টির।
আরামবাগ-ফকিরেরপুল এলাকায় ক্যাসিনো–কাণ্ডে অভিযুক্ত ছয়টি ক্লাবের অবস্থান ২০০ থেকে ৩০০ গজের মধ্যে। গত বৃহস্পতিবার ক্লাবগুলো ঘুরে দেখা যায়, দুই বছরেও তালা খোলেনি ভিক্টোরিয়া, ওয়ান্ডারার্স, ইয়ংমেনস ও দিলকুশা ক্লাবের। ক্লাব ভবনগুলোতে নেই কোনো ব্যস্ততা। নেই খেলোয়াড়–কর্মকর্তাদের যাওয়া–আসা।
অবশ্য সব ক্লাবের অবস্থা এক রকম নয়। মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের মূল ফটকে এখন আর তালা নেই। মুক্তিযোদ্ধার টি-শার্ট পরা ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নিজেকে ক্লাবের সদস্য দাবি করে জানালেন, ক্লাব কর্তৃপক্ষ সবকিছু দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছে তাঁকে। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, জুয়া খেলার স্থানগুলো বন্ধ। দিলকুশা ক্লাবের প্রধান ফটক দিয়ে উঁকি মেরে দেখা গেল, ভেতরে পরিত্যক্ত অবস্থা। ঘুটঘুটে অন্ধকার। এটি যে একটা ক্লাব, বোঝারই উপায় নেই। পাশেই ১১৮ বছরের পুরোনো ক্লাব ভিক্টোরিয়ার ছোট ফটকের কিছু অংশ ভেঙে গেছে। পানি জমে স্যাঁতসেঁতে হয়ে আছে ভেতরের মেঝে।
অভিযানের পর থেকেই মোহামেডানে তালা শুধু ক্যাসিনো ও জুয়া খেলার হলঘরে। মূল ভবন খোলা থাকায় সেখানে চলছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। আরামবাগের ক্যাসিনো খেলার হলঘরে এখনো তালা ঝুলছে। অবশ্য কয়েক মাস আগে তারা মতিঝিল থানা পুলিশের বিশেষ অনুমতি নিয়ে অফিস ও খেলোয়াড়দের থাকার জায়গা খুলে দিয়েছে।
এরই মধ্যে কয়েকটি বন্ধ ক্লাবে চুরির অভিযোগ উঠেছে। ভিক্টোরিয়া ক্লাবের দরজা-জানালা ভেঙে এসি, সোফা, চেয়ার টেবিলসহ নানা কিছু চুরি হয়ে গেছে। একই অভিযোগ ইয়ংমেনস, ওয়ান্ডারার্স, দিলকুশা ক্লাবের কর্মকর্তাদেরও। তাঁরা বলছেন, ক্লাবের ভেতরে এখন আর কিছুই নেই। সবই চুরি হয়ে গেছে। এমনকি ট্রফিগুলো পর্যন্ত নেই। চুরির ব্যাপারে তখন অভিযোগও করা হয় মতিঝিল থানায়।
খেলাধুলার স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে বন্ধ ক্লাবগুলো খুলে দেওয়া জন্য বেশ কয়েকবার মতিঝিল থানায় আবেদনও করা হয়েছে বলে জানান ক্লাব কর্মকর্তারা। ওপর মহলের নির্দেশ এলে তবেই ক্লাব খোলা হবে বলছে পুলিশ। অবশ্য গত বুধবার এক অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান দ্রুতই ক্লাব খোলার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন।
একসময়ের ফুটবলার তৈরির কারখানা হিসেবে পরিচিত ছিল ফকিরেরপুল ইয়ংমেনস ক্লাব। যদিও ফুটবল মাঠে ক্লাবটির সরব উপস্থিতি নেই অনেক বছরই। ক্লাব থেকে বিদায় নিয়েছে খেলার সংস্কৃতি। উপরন্তু ক্যাসিনো–কাণ্ডে ইয়ংমেনসের খেলার সেই ঐতিহ্য পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার পথে। গত দুই বছরে ক্লাবটিকে খেলার মাঠে পাওয়া গেছে মাত্র একবার। কদিন আগে শেষ হওয়া পেশাদার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ২২ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে তারা হয়েছে সপ্তম।
নেতৃত্ব নিয়ে এই ক্লাবে বরাবর দ্বন্দ্ব ছিল। সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে অতীতে ক্ষমতার হাতবদল হয়েছে ইয়ংমেনস ক্লাবে। ক্যাসিনো–কাণ্ডের সময় এই ক্লাবের সভাপতি ছিলেন তৎকালীন যুবলীগ নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ইয়ংমেনস ক্লাবের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে গত মার্চের শেষ দিকে। কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম ক্লাব চত্বরে দাঁড়িয়ে দ্রুত ক্লাব খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কদিন আগে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলেছি ফুটবলারদের নটর ডেম কলেজের পাশে একটা মেসে রেখে। এতে আমাদের অনেক সমস্যা হয়েছে।’
কমিটির সদস্যসচিব ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের কথা, ‘আমরা ক্লাবের কোনো হিসাব-নিকাশই পাইনি। শূন্য থেকেই কাজ শুরু করেছি। তবে আমরা এক মাসের মধ্যে ক্লাবের সাধারণ সভার মাধ্যমে নতুন কমিটি করে ইয়ংমেনস ক্লাবের অতীত সুনাম ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’
সদ্য সমাপ্ত পেশাদার ফুটবল লিগের দ্বিতীয় স্তর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ২২ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে হয়েছে ষষ্ঠ। এই ওয়ান্ডারার্সই ঢাকা ফুটবল লিগে ১৯৫০-৫৪ সালে টানা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অনন্য রেকর্ড গড়েছিল, যা আজও অম্লান। সেই ক্লাব এখন অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে ধুঁকছে। ক্রিকেটে তারা আছে দ্বিতীয় বিভাগে। হকির প্রিমিয়ার লিগ থেকে নেমে এখন প্রথম বিভাগে।
অবশ্য আগের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টাও আছে। গত ১৬ জুলাই বার্ষিক সাধারণ সভায় নির্বাচনের মাধ্যমে ওয়ান্ডারার্সের নেতৃত্ব বদল হয়েছে। সদস্য চারজন বাড়িয়ে নতুন কমিটি করা হয়েছে ৩৫ জনের। তাঁদের মধ্যে সহসভাপতি ১৪ জন। নতুন কমিটির সভাপতি হয়েছেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি এ কে এম শহিদুল্লাহ। তিনি আগের কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা কামাল হোসেন। বিদায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মোল্লা আবু কাওছার ও সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল। নতুন কমিটিতে জায়গা হয়নি মোল্লা আবু কাওছারের। আর গত বছর আগস্টে ক্যাসিনো মামলায় গ্রেপ্তার হন ঢাকার তাঁতীবাজারের বাসিন্দা জয় গোপাল। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা এবাদুল ইসলাম গত বছর ৮ অক্টোবর মারা গেছেন।
ওয়ান্ডারার্সের ঐতিহ্য ফেরানোই এখন বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নতুন সভাপতি এ কে এম শহিদুল্লাহ বলেছেন, ‘ক্লাব বন্ধ থাকায় কার্যক্রম ঠিকঠাক চালানো যাচ্ছে না। বেশির ভাগ খেলোয়াড়কে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবে রেখে চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলেছি আমরা।’ তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি ক্লাব করেনি, করেছে কিছু লোক। সেই লোকগুলো শাস্তি পাক। দুই বছর ধরে ক্লাব বন্ধ। এটা দেশের খেলাধুলার জন্য ভালো নয়।’
‘আমরা গত ২৮ এপ্রিল আহ্বায়ক কমিটি করেছি। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করবশাহীনুর রহমান, আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ও দিলকুশা ক্লাবের সাবেক কর্মকর্তা
ক্যাসিনো–কাণ্ডের ঠিক আগে দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাব দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠে প্রথম বিভাগে। তবে ক্যাসিনো–কাণ্ডের পর মাঠ, আর্থিক সমস্যা ও করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগ আর মাঠে গড়ায়নি।
অবশ্য মাঠে খেলা না থাকলেও ক্লাব পরিচালনার ক্ষমতা নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছেই। গত ৩০ এপ্রিল ক্রীড়া সংগঠক সৈয়দ রিয়াজুল করিমকে সভাপতি করে দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালনা কমিটি করা হয়। তবে এর আগেই আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে বলে আরেক পক্ষ দাবি করছে। আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসচিব ও দিলকুশা ক্লাবের সাবেক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গত ২৮ এপ্রিল আহ্বায়ক কমিটি করেছি। শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করব।’
কিন্তু রিয়াজুল করিমের দাবি, ‘আমাদের সমস্যায় ফেলতে ওরা আহ্বায়ক কমিটি করেছে। আমরা সেটার প্রতিবাদ করেছি।’ পাল্টাপাল্টি কমিটি নিয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘কিছুদিন আগে স্থানীয় কাউন্সিলর আমাকে ডাকেন। নিয়ম অনুযায়ী একটা কমিটি করা হয়। আগের কমিটির সহসভাপতি সালাউদ্দিন রতন হয়েছেন সাধারণ সম্পাদক। আমরাই বৈধ কমিটি।’
‘স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনার কিছুই জানতাম না আমরা। আমরা বাফুফের কাছে শাস্তি মওকুফের আবেদন করেছিইয়াকুব আলী, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক
১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের প্রথম কলঙ্ক ক্যাসিনো–কাণ্ড। সেটিও ছাপিয়ে গেছে সাম্প্রতিক স্পট ফিক্সিং (খেলার নির্দিষ্ট কোনো মুহূর্তে জুয়াড়িদের অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের প্রভাবিত করা)। চলতি শীর্ষ স্তরের প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে তিনটি ম্যাচে আরামবাগের ফুটবলারদের স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। শাস্তি হিসেবে আরামবাগকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে আরও নিচে ঢাকার প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে।
স্পট ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আরামবাগের ১৪ জন খেলোয়াড়কেও বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ করেছে বাফুফে। ক্লাবের সাবেক সভাপতি মিনহাজুল ইসলামকে দেশের ফুটবলে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনার কিছুই জানতাম না আমরা। আমরা বাফুফের কাছে শাস্তি মওকুফের আবেদন করেছি।’
ক্যাসিনো–কাণ্ডের পর ক্লাবটির সভাপতি মমিনুল হক (সাঈদ) আত্মগোপনে চলে যান। ক্লাবের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিকল্প হিসেবে ক্লাব কর্তৃপক্ষ সভাপতি পদে নিয়ে আসে বসুন্ধরা কিংসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলামকে। এরপরই আরামবাগের চূড়ান্ত পতন শুরু। মিনহাজ ভারত থেকে কোচিং স্টাফ আনার নামে জুয়াড়ি নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ আছে।
ক্যাসিনো–কাণ্ডের পর গত ৬ মার্চ মোহামেডান ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয় বহুল আলোচিত পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল মুবীন। নির্বাচিত পরিচালকদের মধ্যে আছেন সাংসদ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমুখ। ক্যাসিনো–কাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া নতুন কমিটির নির্বাচনে প্রার্থী হননি। তাঁর অনুসারী অনেকেই আর ক্লাবের নেতৃত্বে নেই। ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মোহামেডান এবার প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে ষষ্ঠ হয়েছে। হকি, ক্রিকেটে এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল গড়েছে। তবে ফুটবলে তেমন বড় দল গড়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে। এর কার্যক্রম পরিচালিত হয় ইস্কাটনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল থেকে। কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব পদাধিকারবলে ক্রীড়া চক্রের চেয়ারম্যান ও মহাসচিব। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের নির্বাচন হয় না ২০১৭ সাল থেকে। এ জন্য ক্লাবটির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব।
ক্লাব ভবনে ক্যাসিনো-জুয়া থেকে আয়ের একটি বড় অংশ ক্লাবের ফুটবল দল গড়ার পেছনে খরচ হতো। এখন সেই আয়ও নেই। তবে ক্লাবটি এখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এবার ক্লাবটি প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে ১৩ দলের মধ্যে দশম হয়েছে।
ক্যাসিনো–কাণ্ডের দুই বছর পার হচ্ছে। ক্লাবগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে পারেনি। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় শেখ মোহাম্মদ আসলাম বলেন, ‘ক্যাসিনো–কাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত। তবে দীর্ঘদিন ক্লাব বন্ধ রাখাও ঠিক হচ্ছে না। কারণ, ক্লাব থেকেই তৈরি হয় আগামী দিনের খেলোয়াড়। বন্ধ ক্লাবগুলোতে সেই খেলোয়াড় তৈরির প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে গেছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে দেশের খেলাধুলার। তাই অন্তত শর্ত সাপেক্ষে হলেও ক্লাবগুলো এখন খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’