মগবাজারে বিস্ফোরণ

তদন্ত কমিটিও বিস্ফোরণের উৎস জানাতে পারেনি

রাজধানীর মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় তিনতলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের কারণ জমে থাকা গ্যাস। আর সেই গ্যাস ভবনের নিচতলায় বেঙ্গল মিটের দোকানে জমে ছিল। এই দোকান থেকেই বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে উঠে এসেছে।

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণে ধসে যাওয়া ভবনের একাংশ।
ফাইল ছবি

ফায়ার সার্ভিসের গঠিত তদন্ত কমিটি বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির সদস্য এবং সংস্থার উপপরিচালক দিনমনি শর্মা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের উৎস চিহ্নিত করা যায়নি। তবে বেঙ্গল মিটের দোকান থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে, এটা নিশ্চিত। আমরা বলেছি, তিন কারণে বিস্ফোরণ হতে পারে। প্রথমত বৈদ্যুতিক সুইচ চালু অথবা বন্ধ করার সময় স্পার্ক (স্ফুলিঙ্গ) হয়েছে, সেটা থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। এ ছাড়া মশার ব্যাট দিয়ে মশা মারার সময় স্পার্ক অথবা মোবাইলে কোনো কারণে স্পার্ক হওয়ার পরই ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে।’

গত ২৭ জুন সন্ধ্যার পর মগবাজারের ওয়্যারলেস এলাকায় একটি তিনতলা ভবনের নিচতলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ভবনের নিচতলা পুরোপুরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এ ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুই শতাধিক। বিস্ফোরণের সময় বিকট শব্দে আশপাশের অন্তত সাতটি ভবনের কাচ উড়ে যায়। রাস্তায় থাকা তিনটি বাসের কাচ ভেঙে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত প্রতিবেদনের তথ্যের বিষয়ে বেঙ্গল মিটের হেড অব রিটেইল আসাদুজ্জামান গত রাতে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘অবহেলাজনিত মৃত্যুর’ অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে গত ২৯ জুন রমনা থানার পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলাটি প্রথমে থানা–পুলিশ তদন্ত করলেও পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটে হস্তান্তর করা হয়।

অবশ্য বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সিঁড়ির কাছে গ্যাসের পাইপের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তিতাস গ্যাসের মূল লাইনের সঙ্গেই এই পাইপের সংযোগ রয়েছে। তবে তিতাসের কর্মকর্তারা সংযোগটিকে চোরাই বলে অভিহিত করছেন।

মামলার পর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট তিনতলা ভবনের মালিক মসিউর রহমানকে গ্যাসের সংযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন ভবনমালিক বলেছিলেন, কয়েক বছর আগে গ্যাসের লাইনটি তাঁরা ব্যবহার করতেন। পরে গ্যাস–সংযোগ তাঁরা বিচ্ছিন্ন করে দেন। গ্যাসের লাইনটি অবৈধ বলেও পুলিশের কাছে স্বীকার করেছিলেন তিনি।

বিস্ফোরণের ওই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও তিতাস গ্যাস, বিস্ফোরক পরিদপ্তর এবং পুলিশ সদর দপ্তর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।