প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ও অমর একুশে হলে কিছু শিক্ষার্থী জোর করে উঠে পড়ার চেষ্টা চালিয়েছেন। আধা ঘণ্টা হলে অবস্থানের পর অবশ্য তাঁরা বেরিয়ে যান।
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলে ঢুকে তাঁরা প্রশাসনকে একটি বার্তা দিলেন যে চাইলে তাঁরা নিজেরাই হলে উঠে পড়তে পারেন। বার্তাটি বুঝতে পারলে হল প্রশাসন নিশ্চয়ই আজ থেকে হল খুলে দেবে।
বেরিয়ে গিয়ে হলসংলগ্ন চানখাঁরপুল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে অবস্থান করছেন ওই শিক্ষার্থীরা।
দুপুরে শহীদুল্লাহ হলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী সেখানে জড়ো হয়েছেন। জানতে চাইলে একাধিক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে জানান, বেলা ১১টার দিকে তাঁরা হলে এসেছেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তাঁরা হলের শহীদ আতাউর রহমান খান খাদিম ভবনে উঠে পড়েছিলেন। আধা ঘণ্টা পর তাঁরা সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তাঁরা আশা করছেন, তাঁদের হলে উঠে পড়ার বিষয়টিকে একটি বার্তা হিসেবে নিয়ে প্রশাসন শিগগির হল খুলে দেবে। তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের কথাও হয়েছে।
একই সময় অমর একুশে হলেও ২০ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থী জোর করে ঢুকে পড়েন। সেখানে তাঁরা আধা ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন। পরে বেরিয়ে যান। এ সময় শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবিসংবলিত একটি লিফলেট অমর একুশে হলের ফটকে ঝুলিয়ে যান।
শহীদুল্লাহ হলের ওই ভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মচারী কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ থেকে ৪০ জনের মতো শিক্ষার্থী ভবনের ভেতরে ঢুকেছিলেন।
জোর করে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়ে তাঁরা তালা খুলে হলের ভেতর ঢুকে পড়েন। প্রতি রবি ও বুধবার এই হলের শিক্ষার্থীরা অনুমতি নিয়ে হলে ঢুকে কক্ষ থেকে মালামাল নিতে পারেন। গতকাল রোববার একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় তাঁরা হলে ঢুকতে পারেননি। আজ প্রথমে দু-একজন এসে মালামাল নেওয়ার পর দল বেঁধে ৩০ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী এসে হলে ঢুকে পড়েন। তাঁরা বলছিলেন, হল খুলে দিতে হবে। এখন আর ভেতরে কেউ নেই। হল প্রশাসনকে বিষয়টি আমরা জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে শহীদুল্লাহ হল সংসদের ভিপি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুসেইন আহমেদ সোহান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষার্থীদের জন্য আগামী ১৩ মার্চ থেকে হল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু এর বাইরেও কিছু বিভাগে পরীক্ষা হচ্ছে। ওই সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের ঢাকায় থাকতে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য তাঁরা তাঁদের দাবিগুলো জানাতে আজ হলে এসেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাফ কোয়ার্টারগুলো কিন্তু খোলা আছে, সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্যও যদি হলগুলো খুলে দেওয়া হয়, তাহলে খুব ভালো হয়। শিক্ষার্থীদের এই ম্যাসেজ আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
হল সংসদের জিএস ইরফানুল হক সৌরভ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাঁরা বলেছেন, দাবিগুলো সুনির্দিষ্ট করে তাঁদের জানালে তাঁরা সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করবেন।’
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীরা মালামাল নিতে এসেছিলেন, হলে উঠতে নয়। হল খোলার সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।