সাবেক রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রোববার সকাল ১০টার পর রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ মাঠে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাঁর দাফন হওয়ার কথা।
গতকাল শনিবার বিকেলে জন্মভূমি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের পেমই গ্রামে নিজ বাড়ির প্রাঙ্গণে সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজা শেষে সাহাবুদ্দীন আহমদের মরদেহ আবার ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল ১০টা ২৮ মিনিটে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন।
সাহাবুদ্দীন আহমদের জন্ম নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পেমই গ্রামে, ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। তাঁর বাবা তালুকদার রেসাত আহমদ ভূঁইয়া ছিলেন একজন সমাজসেবক।
মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান সাহাবুদ্দীন আহমদ স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবন শেষ করে সরকারি চাকরি দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। তাঁর কর্মজীবনের শেষটা ছিল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে।
এরশাদ সরকারের পতনের পর ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯১ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। তাঁর নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় সরকারের অধীন ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ বেশ কিছু আইন সংশোধন করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখেন।
প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ একটি শর্তে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করেছিলেন। সেটি হলো সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে তাঁকে তাঁর (প্রধান বিচারপতি) পূর্ব পদে ফিরে যেতে দেওয়া হবে। এভাবে তিনি আবার বিচারালয়ে ফেরেন। ১৯৯৫ সালে তিনি অবসরে যান।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দলটির প্রার্থী হিসেবে সাহাবুদ্দীন আহমদ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ ছিলেন খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শেষে দুই দশক নীরবেই কাটিয়েছেন। তাঁকে সাধারণত কোনো অনুষ্ঠানে দেখা যেত না। গুলশানের বাসাতেই থাকতেন।