রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে ঢাকার আশপাশে চারটি বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও মো. আতিকুল ইসলাম। তাঁরা বলেছেন, রাজধানীতে যাতে আন্তজেলা বাসগুলো প্রবেশ না করে ও সেখানে শুধু সিটি সার্ভিসগুলো চলে সেই চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
আজ বুধবার সকালে ঢাকার অদূরে সাভারের ভাটুলিয়া ও বিরুলিয়া এলাকায় জায়গা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দুই মেয়র। রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো ও যানজট নিরসনে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই পরিদর্শন করেন তাঁরা।
পরিদর্শনকালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, তাঁরা পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চান। সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন। আন্তজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে ১০টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেখান থেকে চারটি স্থান পরিদর্শন করা হয়েছে। তাঁরা মনে করছেন, স্থান চারটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাঁরা সরেজমিনে একটি স্থান পরিদর্শনে আসেন।
ডিএসসিসির মেয়র বলেন, প্রথমে তাঁরা ভাটুলিয়া বিরুলিয়া এলাকা পরিদর্শন করলেন। সরেজমিনে দেখতে চেয়েছেন এটা কতটা কার্যকর। পরে হেমায়েতপুরে আরেকটি জায়গা পরিদর্শনে যাবেন। পরবর্তী সময়ে কাঁচপুর ও কেরানীগঞ্জে নির্ধারণ করা দুটি জায়গায় যাবেন। এসব জায়গা দেখে আগামী জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য সভায় সিদ্ধান্ত নেবেন। এরপর সুপারিশ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।
মেয়র তাপস বলেন, বহির্বিশ্বে তাঁরা দেখেন, ইন্টারসিটি বাস বা গণপরিবহনগুলো শহরের মধ্যে প্রবেশ করে না। কিন্তু আমাদের শহরের মধ্যে মহাখালী ও সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সিটি বাস টার্মিনাল আমাদের কার্যকর নেই। যেখানে–সেখানে সিটি বাস রাস্তার ওপরে থেকে যানজট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আন্তজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে ১০টি জায়গা নির্ধারণ করেছেন। আমরা সেখান থেকে কমিয়ে চারটি ঠিক করেছি। বাকি জায়গাগুলো অনেক দূরে হয়ে যায়। এগুলো বাস্তবে ব্যবহারযোগ্য হবে না। তিনি আরও বলেন, ওই চার জায়গা যদি সবার মতামতের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট করা যায়, তবে আগামী বছর টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুটে আগে ১৬০টি বাস ২৯টির মতো কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হতো। প্রতিযোগিতা করে তারা সড়কে বাস চালাত। তাঁরা সেটি একটি কোম্পানির মাধ্যমে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছেন। বাসমালিক–শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। তাঁরা সবাই চান, রাজধানীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শহরের বাস শহরের মধ্যে চলবে।
ডিএনসিসির মেয়র বলেন, শহরের বাস শহরের ভেতর চলবে। বিভিন্ন জেলার বাস ঢাকার আশপাশে নির্ধারিত বাস টার্মিনালে এসে থামবে। এতে শহরের মধ্যে বাস প্রতিযোগিতা করে চালানো বন্ধ হবে।
গাবতলী, মহাখালী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল সিটি টার্মিনাল হিসেবে পরিচালিত হবে জানিয়ে দুই মেয়র বলেন, সিটি বাসগুলো এসব জায়গা টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে না। আন্তজেলা বাস এগুলো টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে তাঁরা উদ্যোগ নিয়েছেন।