দীর্ঘ ২৮ বছর পর গত মার্চে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে ওঠা অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গঠিত কমিটি দুই মাস পর গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ওই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি মো. আখতারুজ্জামান।
১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জন করে এতে অংশ নেওয়া পাঁচটি প্যানেল। প্যানেলগুলোর অভিযোগ ও আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ মার্চ সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান। প্রথমে কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরে ১৫ কার্যদিবস অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়।
তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. মাকসুদুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, উপাচার্যের কাছে আজ (গতকাল) তাঁরা তাঁদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আজ (গতকাল) হাতে পেয়েছি, তবে খুলে দেখিনি। এ মাসের সিন্ডিকেট সভায় প্রতিবেদনটি উঠবে। সিন্ডিকেটে আলোচনা করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
দেরিতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হকসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের প্যানেল থেকে ডাকসু নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা।
ডাকসুর ভিপি নুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটির কালক্ষেপণ বা গড়িমসির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, নির্বাচনের অনিয়মের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের লোকজন জড়িত ছিলেন।
ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, নির্বাচনে ‘প্রশাসনিক’ যেসব ত্রুটি হয়েছে, তা উদ্ঘাটন করে আগামী নির্বাচনকে আরও যুগোপযোগী, প্রযুক্তিবান্ধব ও স্বচ্ছ করতে এই তদন্ত প্রতিবেদন ভূমিকা রাখতে পারে, যদি এটি একটি ‘গবেষণামূলক’ প্রতিবেদন হয়।
ডাকসু নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল থেকে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আনিসুর রহমান খন্দকার বলছেন, এই কমিটিসহ ডাকসু নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো কমিটির ওপরই তাঁদের আস্থা ছিল না, এখনো নেই।
বামপন্থী দুই জোটের প্যানেল প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য থেকে ডাকসুর ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা লিটন নন্দী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে ‘অবৈধ’ ডাকসু নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করা হলে সেটি হবে ‘চরম অন্যায়’।