ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট কিনতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও রেলস্টেশনে ভিড় করছেন। কমলাপুরে ২৩টি কাউন্টারে টিকিট বিক্রি চলছে। এর মধ্যে নারীদের জন্য দুটি কাউন্টারে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। ফলে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নারী টিকিটপ্রত্যাশীরা।
পুরুষদের মতো নারীদের কেউ কেউ গতকাল রোববার সন্ধ্যা থেকে কাউন্টারের সারির সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে জানা গেছে। রাতে তাঁরা স্টেশনেই ছিলেন। কেউ পেপার, কেউ চাদর বিছিয়ে স্টেশনেই বসেছিলেন টিকিট পাওয়ার জন্য।
নারী টিকিটপ্রত্যাশীরা জানালেন, রেলস্টেশনের কাউন্টারের সামনে কোনো বৈদ্যুতিক পাখা নেই। এ কারণে সারা রাত গরমে তাঁদের কষ্ট করতে হয়েছে। কেউ কেউ বাসা থেকে চেয়ার নিয়ে এসেছেন টিকিট কাটার কষ্ট কম হবে বলে। কেউবা স্টেশনে এসে হাতপাখা কিনেছেন।
নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে কমলাপুরে টিকিট কাটতে এসেছেন নাসরিন আক্তার। তিনি সিল্ক সিটি ট্রেনের দুটি টিকিট কাটবেন বলে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘নারীদের আলাদা কাউন্টার থাকার পরও ভোগান্তি হয়েছে। এদিকে নারীদের কাউন্টারের আশপাশে পুরুষেরা এসে জড়ো হচ্ছেন। আনসার সদস্যদের বলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।’
নাসরিন বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট কাটা যাচ্ছে না, পাচ্ছি না। এ কারণেই স্টেশনে আসা। কিন্তু স্টেশনে এসেও দীর্ঘক্ষণ এ ভোগান্তিতে পড়তে হলো।’
এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. মাসুদ সারওয়ার বলেন, নারীদের সারিতে পুরুষদের আনাগোনা ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
‘অনলাইনের টিকিট কই যায়’
ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় যাবেন সুমন মণ্ডল। তিনি আজ সকাল আটটায় রেলওয়ের সার্ভারে লগইন করেন। ওয়েবসাইটে ঢুকতে সময় লাগে ১২ মিনিট। প্রবেশের পর তিনি দেখতে পান, রংপুর এক্সপ্রেসের শোভন চেয়ারের একটি টিকিটও অবশিষ্ট নেই। অগত্যা তিনি আর টিকিট কাটতে পারলেন না।
সুমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার পক্ষে স্টেশনে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে টিকিট কাটা সম্ভব নয়। অফিস আছে। যেহেতু অর্ধেক টিকিট অনলাইনে, তাই অনলাইনেই টিকিট কাটার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারলাম না। অনলাইনে এত দ্রুত টিকিট কীভাবে শেষ হয়, কই যায়?’
অনলাইনে টাকা কেটে নেওয়ার পর টিকিট মেইলে আসছে না—টিকিটপ্রত্যাশীদের এমন অভিযোগের বিষয়ে সহজের এই জনসংযোগ বিভাগের ব্যবস্থাপক ফারহাত আহমেদ বলেন, ‘এটা আমাদের সার্ভারের কোনো সমস্যা নয়। টিকিট পেমেন্টের গেটওয়ের বিষয়। এ টাকাটা কিন্তু আমরা পাচ্ছি না। পাচ্ছে পেমেন্ট গেটওয়ে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। এ সমস্যা প্রথম দিকে ছিল। এখন তা অনেকটাই সমাধান হয়ে আসছে।’