জাতীয় পতাকায় রঙের সঠিক ব্যবহার নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং বার্জার পেইন্টস। সহযোগিতা দেবে প্রথম আলো।
সবুজের যেমন রকমফের আছে, তেমনি সব লালও এক রকমের নয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় লাল-সবুজ রঙের মাত্রাগত ভিন্নতা প্রায়ই চোখে পড়ে। কোন মাধ্যমে রঙের ব্যবহার করা হচ্ছে, তার ওপরও মাত্রাগত ভিন্নতা ধরা দেয়। এ কারণে অনেকের তৈরি করা জাতীয় পতাকায় লাল-সবুজ রঙের ব্যবহার ঠিক আছে বলে মনে হলেও আসলে তা ঠিক নেই। রঙের সঠিক মাত্রা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভিন্নতা থেকে যায়।
জাতীয় পতাকায় সঠিক রঙের ব্যবহার নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন শিল্পী অধ্যাপক নিসার হোসেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরে বার্জার পেইন্টসের করপোরেট অফিসে হয় এ আলোচনা সভা।
জাতীয় পতাকায় সঠিক রং ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্নতা দেখা যায়। মাপও অনেক সময় যথাযথ হয় না। সঠিক রঙে ও মাপে জাতীয় পতাকা তৈরি করা নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ এবং রং উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বার্জার পেইন্টস। প্রথম আলো এই উদ্যোগে সহযোগিতা করবে।
গতকালের আলোচনায় অংশ নেন বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রূপালী চৌধুরী, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং বার্জারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রূপালী চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি জাতীয় পতাকায় ব্যবহৃত রঙের তারতম্য নিয়ে বিশিষ্ট শিল্পী আবুল বারক আলভী এবং কার্টুনিস্ট আহসান হাবিবের দুটি লেখা প্রথম আলোয় প্রকাশিত হয়েছে। এই লেখা থেকেই বার্জার ও চারুকলা ইনস্টিটিউট জাতীয় পতাকায় রঙের সঠিক ব্যবহার নিয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য উদ্যোগ নিতে অনুপ্রাণিত হয়। প্রথম আলো এই প্রচারণায় সহায়তা করবে। বার্জার পেইন্টস অনেক দিন ধরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সঙ্গে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে একত্রে কাজ করছে। এখন জাতীয় পতাকার রং, আকার ও ব্যবহার সম্পর্কে যে সঠিক নিয়ম আছে, তার প্রয়োগ নিয়ে প্রচারণা ও সচেতনতা তৈরিতে চারুকলার অনুষদের সঙ্গে কাজ করবে বার্জার পেইন্টস।
আলোচকেরা বলেন, লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। জাতীয় পতাকায় জড়িয়ে আছে দেশের সবুজ ভূমির ওপর রক্তিম সূর্য। কিন্তু দেখা যায় অসচেতনতার কারণে পতাকায় সঠিক রং প্রয়োগ করা হয় না। আবার বিভিন্ন মাধ্যমে (কাপড়, কাগজ, পিভিসি বোর্ড) সবুজ ও লাল রঙের মাত্রা একই রকম থাকে না। আবার ডিজিটাল মাধ্যমে যেভাবে জাতীয় পতাকার ইমেজ তৈরি করা হচ্ছে, সেখানেও রঙের মাত্রাগত তারতম্য দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়েই একধরনের বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে জাতীয় পতাকায় সঠিক মাত্রায় রঙের ব্যবহার নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি খুব জরুরি।
আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন বার্জার পেইন্টসের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক মহসীন হাবিব, মহাব্যবস্থাপক এ কে এম সাদেক, মহাব্যবস্থাপক এ এস এম ওবায়দুল্লাহ মাহমুদ ও হেড অব ব্র্যান্ড সেজুতি সালেক।