পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্ব নিয়ে যাঁরা সংশয় প্রকাশ করছেন, তাঁদের মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন।
আজ রোববার পুলিশের সন্ত্রাসবাদবিরোধী বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) জনসচেতনতামূলক ওভিসি ও টিভিসি প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বেনজীর আহমেদ।
আইজিপির এই বক্তব্যের প্রেক্ষাপট হলো গত বৃহস্পতিবার র্যাবের ‘নবজীবনের পথে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে নয়জন জঙ্গি আত্মসমর্পণ করেন। র্যাবের পক্ষ থেকে তাঁদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ–সম্পর্কিত খবরের নিচে বেশ কিছু পাঠক মন্তব্য করেন। তাঁদের অনেককেই নৈরাশ্যবাদী বলে মনে হয়েছে বলে জানান বেনজীর আহমেদ।
রাজারবাগ পুলিশ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মধ্যে অনেক নৈরাশ্যবাদী মানুষ আছেন, যাঁরা কোনো কিছুতেই মঙ্গল খুঁজে পান না, ভালো খুঁজে পান না। তাঁদের মানসিক চিকিৎসা দরকার। যে কারণে তাঁদের মনে নৈরাশ্য জন্মেছে, সেই কারণের চিকিৎসা করা দরকার। ওই অনুষ্ঠানের (র্যাবের) খবরের নিচে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশে তো জঙ্গি নেই। এরা আসল কোথা থেকে?’
আইজিপি আরও বলেন, ‘দেশটাকে কি আগে রক্তাক্ত হতে দেব? জঙ্গিদের মহড়া হতে দেব? কাদম্বিনীকে কি মরিয়া প্রমাণ করিতে হইবে যে সে মরে নাই?’
বেনজীর আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার কারণে জঙ্গি তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে আছে। সপ্তাহে সপ্তাহে মাসে মাসে জঙ্গি ধরা হয় বলে, জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে। জঙ্গিবাদের শেষ শিকড় পুলিশ উপড়ে ফেলতে চায়।
বেনজীর আহমেদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জঙ্গিবাদে জড়ানোর সূতিকাগার হিসেবে কাজ করছে। সে কারণে সাইবার স্পেসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের সব কটি ইউনিট নজরদারির কাজে যুক্ত আছে।
এটিইউর প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কামরুল আহসান বলেন, শুধু কঠোরভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করা যায় না। সে জন্য কাউন্টার ন্যারেটিভ (জঙ্গিবাদবিরোধী ভাষ্য) প্রচার করতে হবে।
কামরুল আহসান বলেন, তরুণদের অনলাইনে থাকার পরিমাণ আগের চেয়ে বেড়েছে। তারা অনেক সময় সত্য-মিথ্যা বুঝে উঠতে পারে না। কোথায় থামতে হবে, তাও তারা জানে না। এটিইউর ওভিসি বা টিভিসি থেকে একজন তরুণও যদি জঙ্গিবাদের থাবা থেকে রক্ষা পায়, তাহলে তাঁরা খুশি হবেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এটিইউর অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মঈনুর রহমান চৌধুরী, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
সাড়ে চার মিনিটের ওই ওভিসি/টিভিসিতে একজন তরুণ কীভাবে জঙ্গিবাদের খপ্পরে পড়ে পরিবার ও সমাজ থেকে ছিটকে পড়ে, তা দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের ফেসবুক পেজ ও ইউটিউবে এটি প্রচারিত হওয়ার কথা রয়েছে।