ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে জঙ্গিদের তৎপরতা এখন অনলাইনকেন্দ্রিক। জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে। জঙ্গিদের তৎপরতার ওপর পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে। দেশে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।
পাঁচ বছর আগে রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিহত পুলিশের দুই কর্মকর্তার প্রতি আজ বৃহস্পতিবার শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে হোলি আর্টিজান বেকারিতে নৃশংস হামলা চালায় জঙ্গিরা। তারা অস্ত্রের মুখে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে। হত্যা করে ২০ জন দেশি-বিদেশি নাগরিককে। সেই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডে অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গি। হোলি আর্টিজানে হামলার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। এ উপলক্ষে জঙ্গি হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কে শফিকুল ইসলাম বলেন, কেবল বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বেই জঙ্গিরা নেটভিত্তিক প্রচারণা চালাচ্ছে। ভার্চ্যুয়াল ওয়ার্ল্ডে তারা অনেক তৎপর। তবে পুলিশ জঙ্গিদের কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারি করছে। আপাতত দেশে কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই।
শ্রদ্ধা
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আজ থেকে দেশে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। এ কারণে গতকাল বুধবারই কয়েকটি দেশের কূটনীতিকেরা হোলি আর্টিজানে গিয়ে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। আর আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হোলি আর্টিজানে গিয়ে দুজন জাপানি নাগরিক ফুল দিয়ে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
হোলি আর্টিজান বেকারির মালিক সাদাত মেহেদি প্রথম আলোকে বলেন, আজ থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। এ জন্য গতকাল যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ভারতসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা এখানে এসেছিলেন। তাঁরা ফুল দিয়ে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। লকডাউনের কারণে আজ এখানে কোনো কর্মসূচি নেই।
হোলি আর্টিজানে সেই রাতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। তাঁর হলেন ডিএমপির সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন। আজ সকালে গুলশানে এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার ম্যুরালে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম ও র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলামসহ ডিএমপি ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা জানানো পর র্যাব মহাপরিচালক সাংবাদিকদের বলেন, র্যাব শুরু থেকে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে আসছে। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় জঙ্গিরা সংগঠিত হওয়ার আগে ধরা পড়ছে। দেশে জঙ্গি হামলার কোনো আশঙ্কা নেই।
হোলি আর্টিজান ভবনটি এখন বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গুলশানের লেকপাড়ের দোতলা ভবনটি এখন ছিমছাম, পরিপাটি। জঙ্গিদের নৃশংস হামলা ও পরবর্তী অভিযানের কোনো চিহ্ন আর চোখে পড়ে না।