বনানী থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় কুড়িল বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ডে নির্মাণ করা হচ্ছে যাত্রীছাউনি। তবে সেটির কাজ শেষ হওয়ার আগেই ছাউনির কিছু অংশ ভেঙে গেছে। অপেক্ষমাণ যাত্রী এবং আশপাশের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় এই অবস্থা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, মাস দুয়েক আগে প্রথম যখন যাত্রীছাউনিটি স্থাপন করা হয়, তখনই ছাউনিতে দুই জায়গায় ভাঙা অংশ লাগানো হয়েছিল। লাগানোর পরে পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচ জায়গায় ভেঙে গেছে। মাথার ওপরে ভাঙা অংশগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।
গত রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, নির্মাণাধীন ওই যাত্রীছাউনির ছাউনিতে টেম্পার্ড অ্যাক্রিলিকের পাত (প্লাস্টিকের পাত) ব্যবহার করা হয়েছে। ওই পাতগুলো অন্তত সাতটি জায়গায় ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রেখেই ছাউনির নির্মাণকাজ চলছে। ভাঙা অংশগুলো মাথার ঠিক ওপরে হওয়ায় ছাউনিতে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা তা ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন। অনেক পথচারী আবার ওপরের দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে ওই অংশ এড়িয়ে চলাচল করেন।
যাত্রীছাউনিটির ভালো অংশের নিচে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ছাউনিতে কাচের মতো কিছু একটা ব্যবহার করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, ভেঙে যাওয়া অংশের পাশের অংশটিও যেকোনো সময় মাথার ওপর ভেঙে পড়বে। তাই একটু দূরে দাঁড়িয়েছি।’
নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার আগেই ছাউনি ভেঙে যাওয়ায় ব্যবহৃত উপকরণ এবং কাজের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহ জেগেছে অনেকের মনে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তারিন বলেন, ‘দুই মাস আগে যেদিন ছাউনি বসানো হয়েছিল, তখনই ছাউনির দুটি অংশে ভাঙা দেখতে পাই। অর্থাৎ নির্মাণকারীরা ভাঙা কিংবা অকেজো জিনিস ব্যবহার করছে। পর্যায়ক্রমে আরও বেশ কয়েকটি জায়গায় এভাবে ভেঙে গেছে।’
ছাউনিতে ব্যবহৃত টেম্পার্ড অ্যাক্রিলিক পাতগুলো দেখতে অনেকটা কাচের মতো। কিছুটা অস্বচ্ছ ওই পাত নিচ থেকে দাঁড়িয়ে দেখলে অনেকেই কাচ ভেবে নেন। তাতেই ছাউনি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা জাগে পথচারীদের মনে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) তত্ত্বাবধানে ওই সড়কে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করছে ‘ভিনাইল ওয়ার্ল্ড’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ছয় কিলোমিটারজুড়ে সড়কের দুই পাশে ১৫০ ফুট থেকে ৫৮৫ ফুটের মধ্যে মোট ১২টি যাত্রীছাউনি নির্মাণ করা হচ্ছে।
ভিনাইল ওয়ার্ল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবেদ মনসুর বলেন, অ্যাক্রিলিকের পাতগুলো দেশের বাইরে থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। এগুলো ওঠানো–নামানোর সময় কিছু কিছু জায়গায় ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশ পরিবর্তনের জন্য নতুন করে ওই পাত আনা হয়েছে। ঈদের ছুটিতে শ্রমিক না থাকায় ভাঙা অংশ পরিবর্তন করতে এক সপ্তাহ লাগতে পারে বলেও তিনি জানান।