কোন স্ট্র্যাটেজিক কারণে বিএনপির কর্মসূচিতে মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ আসে: ফখরুল

নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কোন স্ট্র্যাটেজিক কারণে পুলিশ সামনে আসেনি, যেখানে বিএনপির কর্মসূচিতে মুহূর্তের মধ্যে পুলিশ হাজির হয়। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া পরিবারের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

গত সোমবার দিবাগত রাতের পর গতকাল মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেট এলাকার দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সেখানে যায়। এ নিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, স্ট্র্যাটেজিক কারণে পুলিশ সামনে আসেনি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, স্ট্র্যাটেজিক কারণে কি মানুষ নিহত হবে? সমস্যা তৈরি হবে? সেই সমস্যা নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা হবে? কোন স্ট্যাটেজিক কারণ থাকে, যখন বিএনপির ছোটখাটো একটি কর্মসূচিকে প্রতিহত করার জন্য শত শত, হাজার হাজার পুলিশ মুহূর্তের মধ্যে হাজির হয়? কোন স্ট্র্যাটেজিক কারণে বিএনপি মিছিলে গুলি চালানো হয়? কোন স্ট্র্যাটেজিক কারণে বিএনপির বৈধ আন্দোলনকে বন্ধ করে দেওয়া হয়?

নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ

সরকার রাষ্ট্রকেও ব্যর্থ করেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কোথাও কোনো জবাবদিহি নেই। পুলিশকে, অন্য কোনো বিভাগকে জবাবদিহি করতে হয় না। দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কারণ, তারা সরাসরি জড়িত। দুদকেরও দলীয়করণ হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে ১৫ বছর পর দুর্নীতির মামলা নিয়ে রুল জারি হওয়া এবং বিএনপি নেতা মোশাররফ হোসেনের মামলা সামনে আনার সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, যখন নিজেদের দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হচ্ছে, তখন মানুষের নজর সরাতে বিরোধী দলের এসব মামলা সামনে আনা হচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ক্ষমতায় থাকার বড় অস্ত্র ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা। আওয়ামী লীগ সরকার সেভাবেই ক্ষমতায় আছে। বহু আন্দোলন হয়েছে, গুম–খুন হওয়া পরিবারগুলো জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনেও গিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা কেউ গ্রহণ করতে পারেনি। তবে বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিচ্ছে। তার প্রমাণ র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, তা প্রমাণিত সত্য। দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে। গুম–খুন করে, নির্যাতন করে, কারাগারে পাঠিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হচ্ছে। এখন রুখে দাঁড়ানোর সময়, উঠে দাঁড়ানোর সময়। তিনি গুম–খুনের শিকার পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
চট্টগ্রামের নিহত সাবেক ছাত্রদল নেতা নুরুল আলমের স্ত্রী সুমি আক্তার অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে গেছি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। আল্লাহর আদালতে বিচার চাই। সন্তানরা যেন বিচার দেখতে পারে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, সরকারের এই নির্যাতনের কোনো শেষ নেই। রাষ্ট্র যখন নিষ্পেষণ করে, তখন বিচারের জায়গা থাকে না।

বিএনপি সম্পর্কে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিভিন্ন ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সমালোচনা করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।