মন্ত্রিপরিষদের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবিতে আজ বৃহস্পতিবারও রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা এতে অংশ নিয়েছেন। গতকাল বুধবার রাত থেকে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়।
আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শাহবাগের মোড়ে অবস্থান নেন ৫০ থেকে ৬০ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনো তাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন। অবরোধে শাহবাগ ও আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কেন্দ্রীয় সভাপতি শেখ আতিকুর রহমান বলেন, আগামী শনিবার (৬ অক্টোবর) বেলা তিনটায় শাহবাগে মহাসমাবেশ করবেন তাঁরা। দাবি না মানা পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা ছাড়াও তাঁদের অন্য দাবিগুলো হলো মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য সুরক্ষা আইন, রাজাকারের সন্তানদের সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না দেওয়া ও তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা।
শাহবাগ মোড় অবরোধ করায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ওই এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শাহবাগ হয়ে যেসব গাড়ি চলে, সেগুলোকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে দিয়ে ডাইভারশন করা হচ্ছে। এলিফ্যান্ট রোড হয়ে মৎস্য ভবন অভিমুখী গাড়িগুলোকেও বিকল্প পথে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ রয়েছে। শাহবাগ এলাকায় দায়িত্বরত ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বুধবার বৈঠকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের যে সুপারিশ করেছিল সরকারি কমিটি, তাতে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অর্থাৎ ৯ম থেকে ১৩ তম গ্রেড পর্যন্ত চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না। এসব পদে নিয়োগ হবে মেধার ভিত্তিতে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন হয়।
বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে নির্বাহী আদেশে সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি চালু করা হয়। বর্তমানে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে ৪৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হয়। বাকি ৫৫ শতাংশ পদে নিয়োগ করা হয় অগ্রাধিকার কোটায়। অগ্রাধিকার কোটার মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা (পরে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, এখন নাতি-নাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিসত্তা কোটা। সর্বশেষ ২০১২ সালে বিদ্যমান অগ্রাধিকার কোটায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেই কোটা থেকে ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়। এর বাইরে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির চাকরিতে পোষ্য, আনসার-ভিডিপিসহ আরও কিছু কোটা রয়েছে।