ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরারের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজন জামিন পেয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এই আদেশ দেন।
জামিন পাওয়া অপর চারজন হলেন প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান তুষার ও শুভাশীষ প্রামাণিক এবং কিশোর আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক মহিতুল আলম।
কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজন আজ ঢাকার সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন মঞ্জুর করেন।
গতকাল বুধবার এই মামলায় আনিসুল হকসহ পাঁচজনের মালামাল জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। আজ আদালতে এই আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন পাঁচজনের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার।
আবেদনে বলা হয়, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকসহ পাঁচজনকে মামলার অভিযোগ গঠনের আগ পর্যন্ত গ্রেপ্তার কিংবা হয়রানি না করার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে যে ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে, তা জামিনযোগ্য।
আনিসুল হকের অপর আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী বলেন, ‘এই আদালত আনিসুল হকসহ পাঁচজনের মালামাল জব্দের যে আদেশটি দিয়েছেন, তা উচ্চ আদালতের নির্দেশনার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ কারণে আদালতের এই আদেশ প্রত্যাহার করার জন্য আবেদন করছি।’
উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আনিসুল হকসহ পাঁচজনের জামিন মঞ্জুর করেন।
গত বছরের ১ নভেম্বর ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে প্রথম আলোর সহযোগী প্রকাশনা কিশোর আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার। এ ঘটনায় নাইমুল আবরারের বাবা মজিবুর রহমান অবহেলার অভিযোগ এনে ৬ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে নালিশি মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন। এরপর গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সেদিন ঢাকার সিএমএম আদালত প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
২০ জানুয়ারি প্রথম আলোর সম্পাদককে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হাইকোর্ট কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হকসহ অপর পাঁচজনকে অভিযোগ গঠনের আগ পর্যন্ত হয়রানি বা গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দেন। পরে প্রথম আলো সম্পাদক নিম্ন আদালত থেকে জামিন পান। জামিনে থাকা প্রথম আলোর সম্পাদকের পক্ষে গতকাল আদালতে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। আদালত ওই আবেদন মঞ্জুর করেন। এ ছাড়া জামিনে থাকা বাকি চারজন আদালতে হাজিরা দেন।