কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল থেকে সাময়িক বরখাস্ত দুই চিকিৎসক বলেছেন, তাঁরা কখনো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে অস্বীকৃতি জানাননি।
এই দুই চিকিৎসক হলেন কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মুহাম্মাদ ফজলুল হক এবং একই হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা) শারমিন হোসেন।
গতকাল শনিবার কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেহাব উদ্দিন। ওই দিনই সন্ধ্যায় অধিদপ্তর তাঁদের সাময়িক বরখাস্তের ঘোষণা দেয়। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে এই ছয় চিকিৎসক অনিচ্ছা দেখিয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছেন।
শারমিন হোসেন আজ রোববার ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক স্যার আমাকে কোনো টেলিফোন না করে বা কোনো কিছু না জানিয়ে আমার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাম পাঠিয়েছেন যে আমি নাকি কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দিতে ইচ্ছুক না। এমন কথা আমি মৌখিক বা লিখিতভাবে কখনো স্যারের কাছে অথবা কারও কাছে প্রকাশ করেছি বলে আমার জানা নেই।’
শারমিন বলেন, তিনি ১ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করেন। রাতের পালার কাজ সেরে বাসায় ফেরেন সকালে। এক দিন পর তিনি জানতে পারেন তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
শারমিন হোসেন তাঁর হাজিরা খাতার অনুলিপি নিয়ে আজ রোববার সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. বেলাল হোসেনের সঙ্গে দেখা করেন বলেও ওই পোস্টে বলেন।
এ ছাড়া গতকাল রাতে বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন মুহাম্মদ ফজলুল হক। তিনি নিয়মিত হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করছিলেন বলে জানান।
এই দুই চিকিৎসক বাদে আরও যে চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে, তাঁদের একজন আগেই ইস্তফাপত্র দিয়েছেন। অন্য তিনজন হাসপাতালে আসছিলেন না।
জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে শারমিন হোসেন তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি শারমিনকে তাঁর বক্তব্য লিখিতভাবে স্বাস্থ্যসচিবকে জানাতে বলেছেন।
তবে, এই আদেশ প্রত্যাহারের কোনো পরিকল্পনার কথা তিনি জানাতে পারেননি। তিনি বলেছেন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের সুপারিশে চিকিৎসকেরা সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন। তদন্তের পর নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাঁরা নির্দোষ।