‘ওরা চলে যাওয়ায় আজ আমি দিশেহারা’

চুড়িহাট্টায় কেমিক্যাল গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
ছবি: প্রথম আলো

দুই বছর আগে আজকের দিনেই চকবাজারের চুড়িহাট্টায় কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হয়। ওই ঘটনায় দুই ছেলে অপু ও আলীকে হারান মা তারামনি। তাঁর বয়স এখন ৬০ বছরের ওপরে। মা বলেন, ‘এই দুইটা ছেলেই আমাকে দেখে রাখত। ওরা চলে যাওয়ায় আজ আমি দিশেহারা। ছেলের বউরা আমার খোঁজ রাখে না। চিকিৎসাবাবদ যে খরচ হয়, তা জোগাতে পারি না। আজ যে সহযোগিতা করা হলো, তা ছেলের বউরা পেল। আমি কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’

২০১৯ সালে ওই গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জন নিহত হয়। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে চুড়িহাট্টায় গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২০ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেন ঢাকা ৭ আসনের সাংসদ হাজি সেলিম। এ সময় তাঁর দুই ছেলে কামাল উদ্দিন ও সোলায়মান সেলিম সেখানে ছিলেন। সেখানেই এসব কথা বলেন মা তারামনি।

কামাল উদ্দিন বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হলো এই দুই বছরেও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে হাজি সেলিম সহযোগিতা করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমরা এই এলাকায় কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স দিচ্ছি না।’

চুড়িহাট্টায় নিহতের স্বজন।

হাজি সেলিম কথা বলতে না পারায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তাঁর ছোট ছেলে সোলায়মান সেলিম। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ২০টি পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সবাইকে এই সহযোগিতা দেওয়া হবে। এই এলাকায় এখনো কারা কেমিক্যাল ব্যবসা করছে, তা আমরা চিহ্নিত করতে পারছি না। তবে এখানে হাজি সেলিম সাহেব কাউকেই কেমিক্যাল ব্যবসা করতে দেবেন না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কবে নাগাদ এই ব্যবসা এখান থেকে সরানো যাবে, তা তিনি বলতে পারছেন না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সংস্থার সভাপতি নাসির উদ্দিন।

অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানান। কয়েকজন অভিযোগ করলেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন ক্ষতিগ্রস্তদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁরা পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগ পেয়েছেন।

এমনই একজন নূর নবী। অগ্নিকাণ্ডে তাঁর বাবা মারা যান। তিনি বলেন, ‘আমরা তো পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরির জন্য পড়ালেখা করিনি।’ নূর নবী ও অন্যরা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি অথবা বর্তমান চাকরি স্থায়ী করার জন্য দাবি জানান।