সাংসদ হাজি সেলিম ও তাঁর ছেলে ইরফান সেলিমের সম্পদ নিয়ে গণমাধ্যমে আসা তথ্যগুলো খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাঁদের অর্জিত ও দখলি সম্পদগুলো যদি দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধে গণ্য হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী অনুসন্ধান কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানান সংস্থার কমিশনার মোজাম্মেল হক খান।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক খান এ কথা বলেন।
নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় হাজি সেলিমের বাসায় র্যাব অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু অবৈধ জিনিস উদ্ধার করে। এ সময় ইরফান সেলিম ও তাঁর সহযোগীকে আটক করে র্যাব। এরপর গতকাল মঙ্গলবার সাংসদের দখল থেকে ২০ শতক জমি উদ্ধার করে অগ্রণী ব্যাংক।
হাজি সেলিম ও তাঁর পরিবারের অবৈধ সম্পদের বিষয়ে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করলে দুদকের কমিশনার মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘হাজি সেলিম ও তাঁর ছেলে ইরফান সেলিমের বিষয়ে আমরা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ দেখেছি। আমরা লক্ষ করছি, বিষয়গুলো আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিষয়। এতে অবৈধ সম্পদের সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা পরিষ্কার নয়।’
কমিশনার আরও বলেন, ‘অবৈধ সম্পদের বিষয়গুলো যদি দুদকের তফসিলের সঙ্গে সম্পর্কিত হয় এবং তফসিলভুক্ত অপরাধের শামিল হয়, তাহলে আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব। সরকারের জায়গা বা সম্পত্তি হোক, যদি দখল হয়, তাহলে দুদক আইনের আওতাভুক্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গত রোববার রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তাঁর মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজি সেলিমের ছেলে ইরফান ও তাঁর লোকজন। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাঁকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তাঁর লোকজন।
পরের দিন সোমবার সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতা। এ সময় র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিমকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার কারণে দিয়েছেন ছয় মাসের কারাদণ্ড। ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ওই বাড়ি থেকে অস্ত্র, ইয়াবা, ৩৮টি ওয়াকিটকি ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ইরফানকে কাউন্সিলর পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।