দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘এমন কোনো অপরাধ নেই, যার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যুক্ত হওয়ার অভিযোগ এখন পাওয়া যাচ্ছে না। সব ধরনের অপরাধের সঙ্গেই তাদের একাংশের যোগসাজশ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতার দৃষ্টান্ত অহরহ সংবাদমাধ্যম এবং বিভিন্নভাবে উঠে আসছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি, যেখানে আইনের রক্ষকই আইনের ভক্ষক। এভাবে চলতে থাকলে এমন একটা সময় দাঁড়াবে, যখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাম বদলে আইন লঙ্ঘনকারী সংস্থা রাখতে হবে। আমরা এই পরিস্থিতি দেখতে চাই না।’
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটের সাগর-রুনি মিলনায়তনে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এ কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান। জাতিসংঘের নির্যাতনবিরোধী কমিটির সুপারিশসমূহের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার দাবিতে এই সম্মেলন করা হয়।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, ‘এসবের প্রতিকারের জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। হেফাজতে নির্যাতনসহ অন্যান্য নির্যাতন হবে না—এমন সুস্পষ্ট অঙ্গীকার হওয়া প্রয়োজন। যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। রাজনৈতিক পর্যায় থেকে যদি এমন অঙ্গীকার না থাকে এবং সেই অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে কারও ওপর দয়া-করুণা না করে যদি অঙ্গীকার বাস্তবায়ন না করা হয়, তাহলে সেই অঙ্গীকারের কোনো অর্থ নেই।’
আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে যে অপরাধগুলোর অভিযোগ উত্থাপিত হয়, সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা দেখি বিভাগীয় তদন্ত হয়, বিভাগীয় তদন্তের নামে বদলি করা হয়, সর্বোচ্চ অবসরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘এটি তো পুরস্কৃত করা। অবসরে গেলে তিনি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। আর বদলি হলে এক জায়গা থেকে অপরাধ করে অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছেন। এসব নিরসনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এতে করে মানুষের মনে আস্থার একটি জায়গা তৈরি হবে।’
ইফতেখারুজ্জামান ছাড়াও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চেয়ারম্যান জেড আই খান পান্না, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম ইন বাংলাদেশের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।