শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবন নিরবচ্ছিন্ন রাখতে অনলাইন ক্লাস নেওয়ার কথা ভেবেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সংযোগসহ প্রযুক্তিগত অন্যান্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে এসেছে কর্তৃপক্ষ৷ তবে চলমান অনির্দিষ্টকালের ছুটি শেষে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া হবে৷
আজ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনদের সঙ্গে অনলাইন ভার্চুয়াল মিটিং প্ল্যাটফর্ম জুমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবন থেকে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে হওয়া এই সভায় সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ এবং সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদও যুক্ত ছিলেন৷
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় করোনাভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত থাকায় শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হচ্ছে, তা নিরসনের উপায় ও করণীয় বিষয়ে বিশেষ করে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করা হয়৷ অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অনেকের অংশগ্রহণের সক্ষমতা না থাকা, অনেকের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা, বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা রয়েছে বলে সভায় মন্তব্য আসে৷
এ অবস্থায় এখনই অনলাইনে ক্লাস নেওয়া সম্ভব হবে না বলে সভা থেকে অভিমত আসে৷ তবে অনির্ধারিত এই ছুটি দীর্ঘায়িত হলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য ঈদের ছুটির পরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের পর অনলাইনে শিক্ষা-কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলেও সভা থেকে পরামর্শ আসে৷ অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনির্ধারিত এই ছুটির সময়ে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় যে ক্ষতি হচ্ছে, তা পুষিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরে সাপ্তাহিক ছুটির দিনসহ অন্যান্য সময়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার বিষয়ে সভায় অংশ নেওয়া সবাই একমত প্রকাশ করেন৷
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীরা যাতে বিচ্ছিন্ন ও হতাশাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য সম্ভাব্য সব উপায়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা-কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত রাখা ও তাঁদের প্রয়োজনীয় মানবিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং শিক্ষকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়। এ ছাড়াও এই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প সব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা-কার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ডিন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের একই পরামর্শ অনুসরণের অনুরোধ করা হয়৷
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদসহ অন্যান্য শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত যেসব বিদেশি শিক্ষার্থী বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন, তাদের প্রতি যত্নশীল থাকা ও বিশেষ মানবিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়৷