৫০ বছরের পথচলায় বাংলাদেশের অর্জনের প্রশংসা করে মুসলিম দেশগুলোর জোট ওআইসির মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন বলেছেন, বাংলাদেশ আজ ধর্মীয় শান্তির দৃষ্টান্ত।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত ‘মুজিব চিরন্তন’-এর ১০ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার চতুর্থ দিনের পর্বে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।
ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণ করেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ওআইসিতে যোগ দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, তখন থেকেই বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে ওআইসিতে অংশ নেয় এবং ইসলামিক সহযোগিতা ও সংহতির গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত তৈরি করে।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে ওআইসি মহাসচিব বলেন, ‘জাতির পিতা তাঁর জীবনের বেশির ভাগ সময় উৎসর্গ করেছিলেন বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। তাঁর এই অবদান সব সময় স্মরণীয় এবং সমাদৃত হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে তাঁর কন্যাও বৈষম্য ও অসমতার বিরুদ্ধে লড়ছেন এবং নিরলসভাবে কাজ করছেন তাঁর বাবার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে। আজ বাংলাদেশ ধর্মীয় ঐক্য ও শান্তির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
এদিন আরেক ভিডিও বার্তায় ফরাসি সিনেটর জ্যাকি দেরোমেদি বলেছেন, আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে এ নিয়ে গর্ব বোধ করতেন। ফ্রান্সের ইন্টার পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ ফর সাউথ ইস্ট এশিয়ার সভাপতি মাদাম দেরোমেদি তাঁর দুই বছর আগের সফরের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ সামাজিক কর্মকাণ্ড ও শ্রমিক অধিকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্য নিয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক কক্ষপথে অগ্রসর হচ্ছে। বাংলাদেশ ভ্রমণের সময় আমি দেখেছি, বাংলাদেশ এখন আর সেই লক্ষ্য পূরণ না করার মতো অবস্থায় নেই। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আজ গর্ব বোধ করতেন।’
ফ্রান্সের সিনেটর মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের পতাকা দেশটির ইতিহাসের সেই ভয়ানক মুহূর্তটি স্মরণ করিয়ে দেয়। লাল অংশটি বাংলাদেশিদের রক্তকে প্রতীকীরূপে তুলে ধরে। আমাদের দেশে সবুজ আশার প্রতীক, যা কিনা সুন্দরতম ভবিষ্যতের নির্দেশ করে। আপনাদের দেশে সবুজ রং নির্দেশ করে জীবনীশক্তি, যৌবন ও কৃষিভূমিকে।’
ফ্রান্সকে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধু অভিহিত করে দেরোমেদি বলেন, দ্বিপক্ষীয় এই সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা করেন। বাংলাদেশকে ফ্রান্সের সহযোগিতার ওপর আস্থা রাখার আহ্বানও জানান তিনি।
তবে বাংলাদেশের সামনে এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ থাকার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণের পরিবেশও গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।
জাতীয় প্যারেড স্কয়ারের চতুর্থ দিনের অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য ছিল ‘তারুণ্যের আলোক শিখা’। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ। ‘তারুণ্যের আলোক শিখা’র ওপর ভিত্তি করে প্রামাণ্যচিত্র, ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ওপর একটি অ্যানিমেশন অনুষ্ঠানে দেখানো হয়। দ্বিতীয় পর্বে ছিল জাপানের শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছিল দেশীয় শিল্পীদের গাওয়া ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায়’, ‘লোকে বলে ঘরবাড়ি ভালা না আমার’সহ আরও কিছু গান।