সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ও বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার বন্ধে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) আরও তৎপর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তথ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় ও শেষ দিনের প্রথম অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ডিসিদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অধিবেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ।
এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে আইপিটিভি-ইউটিউব চ্যানেলে সংবাদ প্রচার করা হলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে সাড়ে ৮ থেকে ৯ কোটি মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্রচারের একটি বড় ক্ষেত্র এবং অপপ্রচার, গুজব রটানোরও একটি বড় ক্ষেত্র। দেশে গত সাত থেকে আট বছরের পরিসংখ্যানে দেখতে পাই, আমাদের দেশে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে যেসব গুজব রটানো হয়েছে, অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে, স্থানীয়ভাবে বিশৃঙ্খলা থেকে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা হয়েছে, প্রায় সব কটিই এই মাধ্যমে করা হয়েছে। ডিসিদের কাছে আমরা সে বিষয় তুলে ধরেছি, যেন তাঁরা এ ব্যাপারে সব সময় তৎপর থাকেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।’
দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকে বেসরকারি টেলিভিশনমালিকদের সংগঠন এটকো তাদের দাবিগুলো তুলে ধরে। এটকোর সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী এ সময় মন্ত্রীকে একটি স্মারকপত্র দেন। ইকবাল সোবহান বলেন, এটকোর দাবি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে ভিডিও সংবাদ প্রচারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেওয়ার বিধান করা এবং আইপিটিভিতে সংবাদ প্রচার এবং ইউটিউবের মাধ্যমে পত্রিকার সংবাদ প্রচার বন্ধ করা।
তথ্যমন্ত্রী এটকোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘সম্প্রচার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো আইপি টিভি সংবাদ প্রচার করতে পারে না। এ ছাড়া ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে, এগুলো সম্প্রচার নীতিমালার পরিপন্থী। আপনাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। একই সঙ্গে যেসব সংবাদপত্র ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সংবাদ প্রচার করছে, তাদের সেটার কোনো অনুমতি নেই। অনুমোদনহীন কিছু করা বেআইনি। আমরা সে ব্যাপারেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার অবাধ তথ্যপ্রবাহে বিশ্বাস করে। সে কারণেই তাঁর হাত ধরে দেশে বেসরকারি টিভি চ্যানেলের যাত্রা শুরু এবং আজ ৪৫টি টিভি লাইসেন্স পেয়েছে, দৈনিক পত্রিকা ৪৫০ থেকে ১৩ বছরে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ২৫০, অনলাইন নিউজপোর্টাল কত হাজার, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।
এটকো পরিচালকদের মধ্যে এটিএন চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান, বাংলাভিশনের আবদুল হক, দীপ্ত টিভির কাজী জাহিদুল হাসান, সময় টিভির আহমেদ যোবায়ের, ডিবিসি নিউজের এম মঞ্জুরুল ইসলাম, নাগরিক টিভির নাভিদুল হক; মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলম, খাদিজা বেগম প্রমুখ সভায় অংশ নেন।