সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলা

অভিযোগ গঠনের শুনানি পিছিয়ে ২ ডিসেম্বর

সগিরা মোর্শেদ
ছবি: সংগৃহীত

তিন দশক আগে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম হত্যার ঘটনায় করা মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি আবার পিছিয়েছে। আগামী ২ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন তারিখ ঠিক করেছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস এই আদেশ দেন। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) তাপস কুমার পাল।

তাপস কুমার পাল বলেন, অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য সময় চেয়ে আসামিপক্ষ আদালতে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করেন।

৯ নভেম্বর এই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আজকের (২৬ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছিলেন আদালত। আজ আবার নতুন দিন ধার্য করা হলো।

মামলায় গ্রেপ্তার চার আসামিকে আজ কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। চার আসামি হলেন সগিরার ভাশুর চিকিৎসক হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তাঁর স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন (৬৪), শাহিনের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান (৫৯) এবং মারুফ রেজা (৫৯)।

গত ২১ জানুয়ারি এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেন আদালত।

১৬ জানুয়ারি এই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পারিবারিক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে।

সগিরা মোর্শেদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন চার আসামি।

সগিরা মোর্শেদা (৩৪) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ছিলেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে মেয়েকে আনতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের কবলে পড়েন।

একপর্যায়ে দৌড় দিলে তাঁকে গুলি করা হয়। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সগিরা মারা যান। সেদিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন তাঁর স্বামী সালাম চৌধুরী।

প্রত্যক্ষদর্শী রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নেওয়া হয় সাতজনের সাক্ষ্য। বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও মারুফ রেজার নাম আসে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন।

এ আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন।

পরের বছরের ২৭ আগস্ট অপর এক আদেশে হাইকোর্ট ওই রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। এতে থমকে যায় মামলার কার্যক্রম।

বিষয়টি নজরে এলে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট মামলার অধিকতর তদন্ত আদেশে এর আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।