বিনা অনুমতিতে অবৈধ জ্যামার ও নেটওয়ার্ক বুস্টার বিক্রির অভিযোগে র্যাব–৩ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টায় অভিযান চালিয়ে র্যাব এই দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মো. আবু নোমান (২৮) ও সোহেল রানা (৩৭)। আজ রোববার ঢাকার কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল নেটওয়ার্ক জ্যামার, ২৪টি জ্যামার অ্যানটেনা, চারটি এসি অ্যাডাপ্টর, তিনটি পাওয়ার কেবল, তিনটি মোবাইল নেটওয়ার্ক বুস্টার, নয়টি বুস্টারের আউটডোর অ্যানটেনা, ২৬টি ইনডোর অ্যানটেনা, ৩৭টি বুস্টারের কেবল ও একটি ল্যাপটপও উদ্ধার করা হয়েছে।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দীন বলেন, জ্যামার বা বুস্টারের মতো যন্ত্র বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা (বিটিআরসি) অনুমোদন ছাড়া আমদানি করা নিষিদ্ধ। নোমান ও সোহেল এই যন্ত্র আনিয়েছেন কয়েকজন আমদানিকারকের মাধ্যমে। তাঁরা বৈধ পণ্যের আড়ালে এসব পণ্য বাংলাদেশে নিয়ে আসছেন।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, নেটওয়ার্ক জ্যামার ও বুস্টার ব্যবহারের কারণে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর নেটওয়ার্ক অবিচ্ছিন্নভাবে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি র্যাব বিটিআরসিকে জানায়। তা ছাড়া এসব যন্ত্রপাতির ব্যবহার দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ানোর আশঙ্কা আছে। মূলত এই প্রেক্ষাপটেই র্যাব অভিযান চালায়। এই অভিযানে র্যাবের সঙ্গে বিটিআরসির কর্মকর্তাও ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। এর ভিত্তিতে আরও কিছু অভিযান পরিচালিত হবে।
ইন্টারনেটের তথ্য বলছে, নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করলে আশপাশের নির্দিষ্ট অঞ্চল পর্যন্ত ফোনের নেটওয়ার্ক দুর্বল থাকে বা পাওয়া যায় না। অন্যদিকে যেসব জায়গায় নেটওয়ার্ক দুর্বল সেসব জায়গায় বুস্টার নেটওয়ার্ককে শক্তিশালী করে থাকে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা বলেছে, বহুতল ভবনের বাসিন্দা, বিভিন্ন মসজিদ খুতবা ও নামাজের সময় যেন ফোন বেজে না ওঠে এই কাজে তাঁরা এই জ্যামারগুলো কিনছেন। কিন্তু অপরাধীরাও এই জ্যামারের খোঁজ পেয়েছেন। অস্থিতিশীলতা তৈরিতে জ্যামার ব্যবহৃত হচ্ছে বলে র্যাবের আশঙ্কা।
নোমান জানিয়েছে, আইটিস্টল ডট কম বিডি নামে তার একটি ই–কমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ আছে। সোহেল রানারও একটি পেজ আছে। সেটির নাম সোআইএম বিডি ডট কম।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে কমপক্ষে ২০০ জন নেটওয়ার্ক জ্যামার ও বুস্টার কিনেছেন।
সংবাদ সম্মেলন শেষে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় র্যাবের একটি সূত্র জানায়, জ্যামার ব্যবহার করায় তাঁরা নজরদারিতে বাধা পান। তবে এর ব্যবহার কতটা ছড়িয়েছে, সে সম্পর্কে তাঁরা এখনো নিশ্চিত নন।