রাজধানীতে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) আবু হাসান মুহাম্মদ তারিকের বাসায় গৃহকর্মী মৌসুমী আক্তারের (১৪) মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।
রমনার অফিসার্স কোয়ার্টারের একটি ভবনের ১৩তলা থেকে বুধবার সন্ধ্যায় মৌসুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, ওই সময় আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক ঢাকার বাইরে তাঁর কর্মস্থলে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানও বাসায় ছিলেন না।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার রিফাত নুরের উপস্থিতিতে রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমেনা খানম গৃহকর্মীর মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন।
সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, মৌসুমীর গলায় রশির অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া শরীরে কোনো জখমের কোনো চিহ্ন নেই। মেঝে থেকে তার পা সাত ইঞ্চি ওপরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।
এদিকে মৌসুমীর মরদেহ নিতে তার কোনো স্বজন মর্গে আসেননি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় মৌসুমীর গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছয় বছর আগে মৌসুমীর বাবা মুক্তার মিয়া মারা যান। এরপর তার মা আবার বিয়ে করেন। তিন বছর আগে মৌসুমীর এক আত্মীয় তাকে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেন। মৌসুমীর একটি ছোট ভাই ও নানি আছে। বৃহস্পতিবার তাঁরা ঢাকায় এলেও মর্গে যাননি।
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার বিকেলে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফজলুল হক ওই বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ফোনে বিষয়টি আবু হাসানের স্ত্রীকে জানান। তিনি কর্মস্থল থেকে বাসায় এলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল বলেন, এএসআই ফজলুল হক বাদী হয়ে মৌসুমীর মৃত্যুর ঘটনায় রমনা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে।
গৃহকর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে বুধবার রাতে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো জবাব দেননি।