মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় এক শিশুকে হত্যার দায়ে তার সৎ মাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত ওই নারীর নাম সুমাইয়া আক্তার। তিনি উপজেলার রাজদিয়া গ্রামের আরিফ হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটির নাম মো. ইয়াছিন (৮)।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাসান সারোয়ারদি বলেন, মামলার আসামিকে ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর একটি ধারায় আসামিকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় উপলক্ষে আসামিকে পুলিশ পাহারায় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আবার কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইয়াছিনের বাবা আরিফ হোসেন সেনাবাহিনীর সদস্য। ইয়াছিনের মা রিতা আক্তারের সঙ্গে আরিফের বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরে আরিফ সুমাইয়া আক্তারকে বিবাহ করেন। আরিফ চাকরির সুবাদে বাইরে থাকায় ইয়াছিন তার সৎ মা ও দাদির সঙ্গে থাকত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ জুন আরিফকে জানানো হয় তাঁর ছেলে ইয়াছিন বাড়ির পাশের পুকুরে পানিতে ডুবে মারা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। সুমাইয়ার আচরণ দেখে সন্দেহ হয় আরিফের। তিনি কৌশলে সুমাইয়া আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন সুমাইয়া হত্যার কথা স্বীকার করেন। সুমাইয়ার বরাত দিয়ে আরিফ জানান, বিরক্ত করায় ইয়াছিনের মুখ ও গলায় চেপে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন সুমাইয়া। ঘটনা আড়াল করতে বাড়ির পাশে ডোবায় মরদেহ ফেলে দেন। এ ঘটনায় ওই বছরের ১৮ জুন মামলা করেন আরিফ।