আওয়ামী লীগের নেতা সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস ও মেজর (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। মৃণাল কান্তির নামে ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে, যার দাম এক কোটি টাকা। আর পূর্বাচলে রয়েছে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট। আর সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিমশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত আজ বৃহস্পতিবার এই দুই সাবেক সংসদ সদস্যের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মৃণাল কান্তি দাস ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিম। আবেদনে বলা হয়েছে, মুন্সিগঞ্জ–৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাসের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। ধানমন্ডিতে তাঁর একটি ফ্ল্যাট পাওয়া গেছে, যার দাম এক কোটি টাকা। আর পূর্বাচলে রয়েছে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লট। এর বাইরে মোহাম্মদপুরে মৃণাল কান্তির স্ত্রী নিলীমা দাসের নামে সাড়ে ১০ কাঠার ওপর একটি বহুতল ভবনের খোঁজ মিলেছে। তাঁর স্ত্রীর নামে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ১৯১ টাকার সঞ্চয়পত্র থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে কুমিল্লা–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া, তাঁর স্ত্রী মাহমুদা আক্তার ও ছেলে মোহাম্মদ আলীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে দুদক। তাতে বলা হয়, সুবিদ আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাত করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। আদালত শুনানি নিয়ে সুবিদ আলী, তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।
আরও ২৪ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
মাতারবাড়ী আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর স্ত্রীর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের সাবেক উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মিফতাহ উদ্দিন, মেসার্স মুরাদ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গোলাম সরওয়ার চৌধুরী, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডাসের মালিক মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী এবং সেঞ্চুরী ফুড প্রোডাক্টের পরিচালক মোহাম্মদ হাসানুজ্জামানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এর বাইরে উত্তরা ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক কর্মকর্তা মিঠু কুমার সাহার বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
এ ছাড়া এফএএস ফাইন্যান্সের কর্মকর্তা রাসেল শাহরিয়ার, মনিরুজ্জামান, ফয়সাল আলম, আউয়াল হোসেন এবং এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন, মহিন উদ্দিন ও নুর করিমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম মান্নান, রইস উদ্দিন, আব্বাস উদ্দিন আহমেদ, এ এন এ জাহাঙ্গীর আলম, তানজিলা মান্নান, আরশাদ উল্লাহ, ইনামুর রহমান, সৈয়দ ফখরে ফয়সাল, আহমেদ করিম চৌধুরী, আহসানুল বারী ও নিজাম উদ্দিনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।