পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের দুদকে তলব প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কমিশনার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেছেন, দুদক কাউকে নোটিশ করলে তিনি আসতে বাধ্য কি না, সেটা আইনে সুস্পষ্ট বলা নেই। না এলে ধরে নিতে হবে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই। তবে তাঁর সুযোগ আছে সময় চাওয়ার। সময় চাইলে দুদক ১৫ দিন সময় দিতে পারবে। এই এখতিয়ার কমিশনারের রয়েছে।
দুদক কমিশনার জহুরুল হক আরও বলেন, সময় দেওয়ার পরও যদি তিনি দুদকে না আসেন, তাহলে ধরে নিতে হবে তাঁর কোনো বক্তব্য নেই। তখন নথিপত্র দেখে যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে প্রমাণিত, না হলে নাই।
বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা দেশে রয়েছেন কি না, তা জানতে চাইলে জহুরুল হক বলেন, দেশে আছেন নাকি বিদেশে গেছেন, এ–সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য তাঁদের কাছে জানা নেই।
অনুসন্ধানের স্বার্থে যা যা করণীয়, সবই করা হচ্ছে উল্লেখ করে জহুরুল হক বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তির অনুপস্থিতিতেও বিচার হবে, এতে কোনো বাধা নেই। এটা আদালত বুঝবেন।
উল্লেখ্য, বেনজীর আহমেদ ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের নামে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ঢাকাসহ কয়েকটি জেলায় ৬২১ বিঘা জমি, ঢাকার গুলশানে ৪টি ফ্ল্যাট, ৩৩টি ব্যাংক হিসাব, ১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ৩টি বিও হিসাব (শেয়ার ব্যবসা করার বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট) এবং ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের সন্ধান পেয়েছে দুদক। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের ওই আদেশ আসার আগেই গত ৪ মে বেনজীর আহমেদ দেশ ছেড়েছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওই সূত্র জানিয়েছে।
বেনজীর আহমেদ ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপি ছিলেন। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে র্যাবের সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় র্যাবের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি এই বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারাও নিষেধাজ্ঞার আওতায় ছিলেন। যার মধ্যে বেনজীর আহমেদের নামও ছিল। যুক্তরাষ্ট্র যখন নিষেধাজ্ঞা দেয়, তখন আইজিপির দায়িত্বে ছিলেন বেনজীর আহমেদ।