শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার আরও তিনটি অভিযোগ তদন্ত সংস্থায়  

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের আরও তিনটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঢাকার আশুলিয়ায় ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনাসহ পৃথক ঘটনায় এসব অভিযোগ করা হয়েছে। শেখ হাসিনা ছাড়াও সাবেক কয়েকজন মন্ত্রী-সংসদ সদস্য, পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ অপরাধে জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আজ বৃহস্পতিবার অভিযোগ তিনটি দায়ের করা হয়।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান। এরপর ১৪ আগস্ট থেকে আজ বৃহস্পতিবার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১১টি অভিযোগ দায়ের করা হলো। এসব অভিযোগের মধ্যে ১০টি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে। অপরটি হচ্ছে ২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ।

এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে থানা ও আদালতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত ১৩৫টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১২৩টিই হত্যা মামলা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় আজ দায়ের হওয়ার অভিযোগগুলোর মধ্যে আশুলিয়ায় ৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানারাত ইউনিভার্সিটির ছাত্র নিহত মো. আহনাফ আবীর আশরাফুল্লাহর বোন সাইয়েদা আক্তারের পক্ষে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুস সাত্তার পালোয়ান। এ ছাড়া শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ করেন ৫ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানার সামনে নিহত মালয়েশিয়াপ্রবাসী সাইফুল ইসলাম সেকুলের ভাই খায়রুল ইসলাম। আর গত ২০ জুলাই সাভার বাজার রোডের আমিন টাওয়ারের সামনে নিহত মেহেদী হাসানের বাবা বাচ্চু সরকার অপর অভিযোগটি করেন। আবেদনগুলো দায়েরের বিষয়টি জানিয়েছেন আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।

৪৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা আবেদনে ঘটনার তারিখ ৫ আগস্ট আনুমানিক বিকেল পাঁচটা এবং ঘটনার স্থান আশুলিয়া থানার বাইপাইল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আবেদনে আসামি হিসেবে শেখ হাসিনা, কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী, ২১ পুলিশ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৩৬ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার বাইপাইল এলাকায় ছাত্র-জনতা শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে থাকেন। মিছিলে নির্বিচার গুলি চালানো হলে আহনাফসহ ৪৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন। গুলিবিদ্ধ লাশগুলো পেট্রল দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিয়ে গণহত্যার নির্মম ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার উপপরিচালক (প্রশাসন) আতাউর রহমান আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, এ পর্যন্ত ১১টি অভিযোগ এসেছে, যার মধ্যে ১০টি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নিহতের ঘটনা নিয়ে। অপরটি হচ্ছে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ। অভিযোগগুলোর তদন্ত হচ্ছে, এর মধ্যে ১০টির তদন্ত একসঙ্গে হচ্ছে। হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ঘিরে গণহত্যার অভিযোগ আলাদা করে তদন্ত করা হচ্ছে।