মা পান্না কায়সার ছিলেন মহীয়সী নারী: শমী কায়সার

পান্না কায়সারের মরদেহ নিউ ইস্কাটনের বাসায় আসার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন মেয়ে শমী কায়সারসহ স্বজনেরা। ঢাকা, ৪ আগস্ট
ছবি: আশরাফুল আলম

লেখক, গবেষক, শিশু সংগঠক ও সাবেক সংসদ সদস্য পান্না কায়সারের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে পান্না কায়সারের প্রথম জানাজা হয়।

আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বেলা পৌনে তিনটার দিকে পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের গাউস নগর আবাসিক এলাকার বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে তাঁর প্রতি জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ ছাড়া সাহিত্যিক, শিল্পী, প্রকাশকসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ব্যক্তিরা তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পান্না কায়সার

নিউ ইস্কাটনের বাসায় পান্না কায়সারের মেয়ে শমী কায়সার বলেন, তাঁদের মা একজন মহীয়সী নারী ছিলেন।

ছেলে অমিতাভ কায়সার বলেন, পান্না কায়সার একই সঙ্গে ছিলেন তাঁদের মা ও বাবা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ ও প্রজন্ম গড়ে তুলতে আজীবন কাজ করেছেন।

আজ বাদ আসর নিউ ইস্কাটনের বাসার সামনে পান্না কায়সারের দ্বিতীয় জানাজা হবে। পরে তাঁর মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে।

পান্না কায়সার (৭৩) আজ সকালে ইন্তেকাল করেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারের স্ত্রী ছিলেন তিনি।

পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আগামী রোববার বেলা ১১টায় পান্না কায়সারের মরদেহ রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। বেলা একটা পর্যন্ত তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে। বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর তৃতীয় জানাজা হবে। পরে তাঁকে রাজধানীর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

পান্না কায়সারের সঙ্গে মেয়ে শমী কায়সার। এ ছবি এখন স্মৃতি

পান্না কায়সারের জন্ম ১৯৫০ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে পড়াশোনা করেন। পেশা হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছিলেন শিক্ষকতা। তিনি খেলাঘর, উদীচীসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সফলভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ছিলেন।

লেখালেখির জগতে পান্না কায়সারের প্রবেশ ১৯৯১ সালে। তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘মুক্তিযুদ্ধ: আগে ও পরে’। তাঁর অন্য গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘মুক্তি’, ‘নীলিমায় নীল’, ‘হৃদয়ে একাত্তর’, ‘আমি ও আমার মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযুদ্ধ-সমগ্র’, ‘একাত্তরের শহীদ শহীদুল্লা কায়সার’, ‘মুক্তিযুদ্ধের কথকতা’, ‘হৃদয়ে বাংলাদেশ’ প্রভৃতি।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পান্না কায়সার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২১ পেয়েছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল মেয়াদে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন পান্না কায়সার।