চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ডাকা কর্মবিরতি অব্যাহত থাকায় আজ বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো কক্সবাজারের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা বন্ধ ছিল। একই ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল থেকে ব্যক্তিগত চেম্বারেও রোগী দেখা বন্ধ রেখেছেন চিকিৎসকেরা। ফলে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েন। সেবা না পেয়ে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকা সাত শতাধিক রোগী অন্যত্র চলে গেছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে হাসপাতালটির করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যু হয়। এরপর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে কর্তব্যরত এক চিকিৎসককে মারধর এবং হাসপাতালে ভাঙচুর চালান ওই রোগীর স্বজনেরা। এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে বুধবার সকাল থেকে হাসপাতালের সব রকম চিকিৎসাসেবা দেওয়া থেকে বিরত থাকেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
কর্মবিরতির দ্বিতীয় দিনে আজ সকাল থেকে চার দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন চিকিৎসক-নার্স-কর্মচারীরা। দাবিগুলো হলো আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং শাস্তি নিশ্চিত করা, তাঁদের ছবিসহ পরিচয় গণমাধ্যমে প্রকাশ, চিকিৎসক-নার্সসহ হাসপাতালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভাঙচুরের ঘটনায় হাসপাতাল প্রশাসনের মামলা দায়ের এবং আহত চিকিৎসককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
এ ছাড়া হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন কক্সবাজার সরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে ফেরত যান রোগীরা। অচলাবস্থার অবসান না হওয়ায় বিকেল থেকে রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। সন্ধ্যার আগে পুরো হাসপাতাল রোগীশূন্য হয়ে পড়ে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সীমিত পরিসরে জরুরি বিভাগ রাখা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। দাবি মানা না হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবাও বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশেকুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক সজীব কাজীকে মারধর করা হয়। এর পর থেকে কর্মবিরতি চলছে। জরুরি বিভাগ খোলা থাকলেও আবাসিক চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে। রোগীরা অন্যত্র চলে গেছেন। ভাঙচুরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় চিকিৎসক সজীব কাজী বাদী হয়ে বুধবার কক্সবাজার থানায় ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। এরপর পৌরসভার নতুন বাহারছড়া এলাকার দুই ভাই তাহসিন মোহাম্মদ রেজা (২৫) ও তামিম মোহাম্মদ রেজাকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। পরে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।