তুরস্কে ধ্বংসস্তূপে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজে অংশ নিতে ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্সের ১২ সদস্যসহ মোট ৭০ সদস্যের একাধিক দল পাঠানো হচ্ছে। আজ বুধবার রাত ১০টার দিকে দলগুলো বিমানবাহিনীর (সি ১৩০) উড়োজাহাজে তুরস্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবাজারসংলগ্ন কাজী আলাউদ্দিন রোডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ সম্মিলিত সাহায্যকারী দলের সঙ্গে পাঠানোর জন্য ফায়ার সার্ভিসের ১২ সদস্যের এই উদ্ধারকারী দল প্রস্তুত করে। দলগুলোর নেতৃত্ব দেবেন ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক দিনমনি শর্মা। দলটিতে দুজন সহকারী পরিচালক, একজন উপসহকারী পরিচালক, একজন সিনিয়র স্টেশন অফিসার, একজন লিডার এবং বাকি ছয়জন ফায়ার ফাইটার রয়েছেন। এ ছাড়া তুরস্কে উদ্ধারকাজে অংশ নিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ সদস্যের একটি দল, ১০ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল ও ১০ জন ক্রু একই উড়োজাহাজে করে দেশ ছাড়বেন। উদ্ধারকারী ৬০ সদস্যের সঙ্গে আরও ১০ জন অংশ নেবে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকারী দলের সদস্য হিসেবে যাঁরা যাচ্ছেন, তাঁরা ইন্টারন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ অ্যাডভাইজারি গ্রুপের (ইনসারাগ) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত ভবনে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকাজ পরিচালনায় আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের দলটি তুরস্কে বিধ্বস্ত ভবনের কংক্রিট, রড ও গ্রিল কাটার জন্য সঙ্গে করে প্রয়োজনীয় হালকা যন্ত্রপাতি নিয়ে যাচ্ছে। উদ্ধারকারী দলটির দেশে ফেরার তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি। প্রয়োজনে ফেরার সময় পেছাতে পারে। প্রথমবারের মতো এবারই ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকারী দল হিসেবে দেশের বাইরে যাচ্ছে।
দেশে যদি তুরস্কের মতো ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতি কতটুকু, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার মাইন উদ্দিন বলেন, ‘আমরা অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি কিনেছি। জনবল বৃদ্ধি এবং তাঁদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে। সেনাবাহিনী বিভাগ ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ আমাদের প্রস্তুতির জন্য ঝুঁকি। এ অবস্থায় প্রশিক্ষিত জনবল ও যন্ত্রপাতি থাকলেও সেই ধরনের ঘটনা ঘটলে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারা যাবে কি না, তা বড় প্রশ্ন।’
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, ভূগর্ভস্থ পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ও মাটির নিচে গ্যাসলাইন রয়েছে। দেশে ভূমিকম্প হলে এসবই জীবননাশের জন্য হুমকি হবে। একটি ঝাঁকুনির সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে, সেই অটো সিস্টেম থাকতে হবে। এতে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটবে না। সবাইকে সচেতন হতে হবে।