আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে

দেড় যুগ আগে লগি-বইঠা দিয়ে জামায়াতের চারজনকে পিটিয়ে হত্যায় মামলা

দেড় যুগ আগে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে জামায়াতে ইসলামীর চার নেতা–কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টন থানায় এ হত্যা মামলা করেন মো. ছোবেদার আলী নামের এক ব্যক্তি। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মো. নাসিরুল আমীন।

ওসি নাসিরুল আমীন প্রথম আলোকে বলেন, ২০০৬ সালে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে জামায়াতের চারজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার বাদীকেও সেদিন আওয়ামী লীগের লোকজন পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। বাদী জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানান পল্টন থানার ওসি।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সারা দেশে ২৫৫টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে হত্যা মামলার সংখ্যা ২১৫।

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—এ তিন দলেরই সমাবেশ ছিল। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ‘লগি-বইঠা’ নিয়ে সেই সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা বলা হয়েছিল। সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ পল্টন ময়দানে, বিএনপি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং জামায়াতে ইসলামী বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে অবস্থান নিয়েছিল। সেদিন দুপুর থেকে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় ‘লগি-বইঠা’সদৃশ লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মানুষ মারার দৃশ্য পরবর্তী সময়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। সেদিনের সেই সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন। এর মধ্যে চারজন মোজাহিদ (২২), হাফেজ শিপন (২৩), হাফেজ মাসুম (২১) ও হাবিবুর রহমান (৪৫) জামায়াতে ইসলামীর নেতা–কর্মী ছিলেন। নিহত আরেকজন ছিলেন ওয়ার্কার্স পার্টির কর্মী।

মামলার আসামি যাঁরা

শেখ হাসিনা, দেশবন্ধু গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা (৬৫), কুড়িগ্রামের আবদুল কাদের মণ্ডল (৫৮), বনানীর মীর মারফত উল্লাহ সুমন (৫৫), রকিবুল ইসলাম উজ্জ্বল (৫৫), শেখ নজরুল ইসলাম বাদল (৪৮), আওয়ামী লীগের বনানীর জামাই বাজার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মো. হিরন (৫০), কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর হাফিজুর রহমান (৫৬), বনানীর মো. হাসান (৬১০), মতিঝিলের শামীম খান (৬০), সিলেটের মনা মিয়া (৫০), বরিশালের সালাউদ্দিন রিপন (৫০), পল্টনের মিন্টু চৌধুরী (৬০), জেবিন (৪৪), রফিকুল ইসলাম (৪৬), কুমিল্লার রাসেল হায়দার (৬৫), কুমিল্লার জিয়াউর রহমান চৌধুরী (৪৮), আবদুল হান্নান (৪৫), কুমিল্লার আলমগীর হোসেন (৪৬), মাহবুবুল হক (৫৫), হুমায়ুন (৫০), কবির (৫০), মাহবুব আলী (৩৮), হাফেজ বেলাল (৫৫), কবির হোসেন (৪৩), মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের সভাপতি মনির হোসেন (৫০), মোকাররম হোসেন (৪২), মাজহারুল ইসলাম, আবুল কাশেম, বিপ্লব, সিরাজ, কামাল হোসেন, অজিউল্লাহ মাঝি, মহিবুল্লাহ, করিম, পারভেজ, বেলায়েত, বাবলু, সহিদুল্লাহ, বাপ্পাদিত্য বসু, রাশেদ খান ও আশিকুর রহমান।