বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সেই সহকারী প্রক্টরের স্ত্রীকে নিয়োগ

আবেদনপত্রে জালিয়াতির অভিযোগে শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ বাতিল হওয়া অভি বড়ুয়াকে এবার কর্মচারী পদে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়োগে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনা মানা হয়নি।

আজ বৃহস্পিতবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদ সই করা এক চিঠিতে এ নিয়োগের বিষয়ে জানানো হয়। চিঠিতে অভি বড়ুয়াকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরের রিচার্স ফেলো শূন্যপদের বিপরীতে দৈনিক ৬৫০ টাকা মজুরির ভিত্তিতে ছয় মাসের জন্য ঊর্ধ্বতন সহকারী পদে নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

অভি বড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অরুপ বড়ুয়ার স্ত্রী। তিনি পালি বিভাগের প্রভাষক পদের আলাদা দুটি বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন করেন। তবে তিনি স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম না হয়েও আবেদনপত্রে প্রথম বলে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া বিজ্ঞপ্তিতে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব উল্লেখ করার কথা থাকলেও তিনি তা করেননি। আবেদনপত্রে এমন ভুল তথ্য দেওয়াকে ‘জালিয়াতি’ হিসেবে চিহ্নিত করে আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই কমিটি। এরপর তাঁর আবেদনপত্রটি বাতিল করে।

তবে যাছাই–বাছাই কমিটির এ সিদ্ধান্তকে পাত্তা না দিয়েই অভি বড়ুয়াকে শিক্ষক নিয়োগের নির্বচনী বোর্ডে (মৌখিক পরীক্ষা) ডাকে কর্তৃপক্ষ। ওই বোর্ডে এক সদস্যর প্রশ্নের উত্তর না দিতে পারা সত্ত্বেও তাঁকে প্রভাষক পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। এসব নিয়ে সমালোচনার একপর্যায়ে তাঁর নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট। এরপর ১ আগস্ট  অভি বড়ুয়ার এ ‘জালিয়াতি’ তুলে ধরা শিক্ষকের বিরুদ্ধেই তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। ২০ আগস্ট এ তদন্ত কমিটি বাতিল চেয়ে উপাচার্যকে চিঠি দেয় শিক্ষক সমিতি।

এত সমালোচনার পর আবারও অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে জানতে আজ বেলা দেড়টায় উপাচার্য শিরীণ আখতার ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নূর আহমদের কার্যালয়ে গেলেও তাঁদের পাওয়া যায়নি। পরে তাঁদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কেউ ধরেননি।

দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সংস্থাটি দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তাদের অনুমতি ছাড়া অ্যাডহক, দৈনিকভিত্তিক জনবল ও মাস্টাররোলে নিয়োগ না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে অভি বড়ুয়াকে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউজিসির অনুমোদন নেওয়া হয়নি।

অবশ্য শুধু অভি বড়ুয়া নয়। গত দুই মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে অন্তত ৩০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতাবলে এসব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ২০ আগস্ট উপাচার্য শিরীণ আখতার প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এসব নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সামনে আরও নিয়োগ দেওয়া হবে।’