২০০৫ সালে বোমা হামলায় নিহত বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে ও সোহেল আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ঢাকা, ১৪ নভেম্বর
২০০৫ সালে বোমা হামলায় নিহত বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে ও সোহেল আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ঢাকা, ১৪ নভেম্বর

বিদেশি হস্তক্ষেপে বিগত সরকার ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিল: আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি হস্তক্ষেপের ফলে বিগত সরকার ফ্যাসিস্টে পরিণত হয়েছিল।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে আয়োজিত এক স্মরণসভায় আসিফ নজরুল এ কথা বলেন। ২০০৫ সালে বোমা হামলায় নিহত বিচারক জগন্নাথ পাঁড়ে ও সোহেল আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকীতে এ স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকারের নৃশংসতায় এত মানুষকে প্রাণ দিতে হলো, গণহত্যা চালানো হলো, এর সঙ্গে বিচারকদের নৃশংসভাবে হত্যার সেই ঘটনাটির একটি যোগসূত্র আছে। ২০০৫-২০০৬ সালে মৌলবাদী ঘটনাগুলো যতটা ঘটেছে, তার থেকে অনেক বাড়িয়ে প্রচার করে আমাদের একটা তকমা দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিদেশি হস্তক্ষেপকারীরা। তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলিয়েছে, যেন তাদের নিয়ন্ত্রিত একটি সরকার এ দেশে স্থাপন করতে পারে। আর এর ফলাফল ছিল বিতাড়িত সেই ফ্যাসিবাদী সরকার।’

আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘তাদের সব সময় চেষ্টা থাকে বাংলাদেশকে হেয় করার। একটা ঘটনাকে ফুলিয়ে–ফাঁপিয়ে তা নিয়ে ষড়যন্ত্র করার। তবে তাদের জানিয়ে দিতে হবে, এ দেশে আর কোনো দিন, কোনো মূল্যে ফ্যাসিবাদ, জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদকে জায়গা করে নিতে দেওয়া হবে না।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যদি দেশের মানুষের ও সমাজের ভালো চাই, আমাদের দেশকে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ও ফ্যাসিবাদ থেকে রক্ষা করতে চাই, তাহলে সবার আগে জঙ্গিবাদ ও মৌলবাদ থেকে দেশকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করতে হবে। জঙ্গিবাদ বা উগ্রবাদ বা অন্য কোনো কিছুর সুযোগ নিয়ে আমাদের অভ্যুত্থান ও দেশের সম্ভাবনাকে দেশি-বিদেশি কোনো শক্তি যেন ব্যাহত করতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।’

এ সময় নিহত বিচারকদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমরা সব সময় তাঁদের পাশে আছি, থাকব।’

২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর জঙ্গি হামলার মাধ্যমে হত্যা করা হয় বাংলাদেশে বিচার বিভাগে কর্মরত সোহেল আহমেদ ও জগন্নাথ পাঁড়েকে। জেলা জজ আদালত ২০০৬ সালের ২৯ মে এ ঘটনায় ৭ জনকে ফাঁসির আদেশ দেন। একজন পলাতক আসামি বাদে দেশের বিভিন্ন কারাগারে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ অবশিষ্ট ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভুঁঞা, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমিরুল ইসলাম, আইন ও বিচার বিভাগ মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ আবু তাহের এবং সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেলাল উদ্দিন।