মায়ের দুধ শিশুর প্রথম টিকা। শৈশবকালীন সাধারণ রোগবালাই থেকে শিশুকে সুরক্ষা দেয় মায়ের দুধ। বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে আজ ১ আগস্ট দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথারিন রাসেল ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস এ কথা বলেছেন। আজ থেকে এই সপ্তাহ শুরু হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক সংকট অব্যাহত থাকায় বিশ্বের লাখ লাখ শিশু স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে শিশুর জীবন শুরু করার জন্য মায়ের দুধের গুরুত্ব বেড়েছে।
মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘মাতৃদুগ্ধ পান এগিয়ে নিতে, শিক্ষা ও সহযোগিতা হবে বাড়াতে’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সরকারদের শিশু স্বাস্থ্যে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে বলেছে, মায়ের দুধ খাওয়ানোবিষয়ক নীতি ও কর্মসূচিতে সমর্থন দিতে হবে, বিশেষ করে জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে থাকা সবচেয়ে নাজুক পরিবারগুলোর জন্য।
আফগানিস্তান, ইয়েমেন, ইউক্রেন ও আফ্রিকার কিছু দেশের জরুরি পরিস্থিতিতে থাকা শিশুদের নিরাপদ, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের নিশ্চয়তা দিতে পারে মায়ের দুধ। শৈশবকালীন রোগবালাই ও শিশুদের অপুষ্টি থেকে সবচেয়ে শক্তিশালী সুরক্ষা দেয় মায়ের দুধ।
জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে থাকা মায়েরা মানসিক চাপ ও শারীরিক ক্লান্তিতে বেশি ভোগেন। শিশুকে দুধ খাওয়ানোর মতো জায়গার সংকট থাকে। মায়েদের জন্য উপযুক্ত পয়োব্যবস্থা থাকে না। এর অর্থ হচ্ছে, বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় মায়ের দুধ থেকে শিশুরা বঞ্চিত হন।
জন্মের প্রথম এক ঘণ্টায় বিশ্বের অর্ধেকের কম নবজাতক মায়ের দুধ পায়। এটা তাদের রোগ ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে। জীবনের প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ পায় মাত্র ৪৪ শতাংশ শিশু। এটি ২০২৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
পরিস্থিতির উন্নতির জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ বিশ্বের দেশগুলোর সরকার, দাতা সংস্থা, নাগরিক সমাজ ও ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে কিছু পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, জরুরি পরিস্থিতি চলছে এমন স্থানগুলোতে মায়ের দুধ খাওয়া নীতি ও কর্মসূচিতে বিনিয়োগে অগ্রাধিকার দিতে হবে; মায়েরা যেন ঠিকঠাকভাবে দুধ খাওয়াতে পারেন, সে জন্য স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে হবে; কৃত্রিম শিশু খাদ্যের অনৈতিক বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া থেকে মা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দূরে রাখার উদ্যোগ নিতে হবে এবং পরিবারবান্ধব নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে, যেন মায়েরা শিশুকে দুধ খাওয়ানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় ও উপযুক্ত স্থান পান।