রাজধানীর নয়াপল্টনে গত বছর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুবদলের নেতা শামীম মোল্লাকে হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৭০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মো. আব্বাস আলী বাদী হয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর এ হত্যা মামলা করেন।
আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর ১১ সদস্য রয়েছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর বাইরে ছাত্রলীগের সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সাবেক সাবেক মহাপরিদর্শকসহ বাহিনীর ৪৬ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
এর বাইরে বিভিন্ন জেলা, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাদের মামলায় আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৭০৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান আসামি হলেন গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর আলমসহ ৭০৪ জন এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গসংগঠনের অজ্ঞাতনামা ১০–১২ হাজার নেতা–কর্মী গত ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির নেতা–কর্মীদের হত্যা, গুম করা ও সমাবেশ পণ্ড করার জন্য আসেন। পুলিশের সহায়তায় বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশে হামলা করেন তাঁরা।
মামলায় আরও বলা হয়, ২৮ অক্টোবর বিএনপির শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ নস্যাৎ করা ও জাতীয় নেতাদের হত্যার জন্য মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শান্তিনগর, কাকরাইল, প্রেসক্লাব, পুরানা পল্টন, শাহজাহানপুর, কমলাপুর, মতিঝিল, মালিবাগ, ফকিরাপুলসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন। সেদিন রাত ১০টা পর্যন্ত হামলা চালানো হয়। এতে বিএনপির শত শত নেতা–কর্মী আহত হন এবং যুবদলের নেতা শামীমকে হত্যা করা হয়। শামীমের বাবা ইউসুফ মিয়াকে একটি মিথ্যা সাজানো এজাহারে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর বেলা ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য আসামিরা পল্টনের ভিআইপি সড়কের হোটেল লিভিংয়ের সামনের পাকা রাস্তার ওপর বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা বিএনপি নেতা–কর্মীদের ওপর গুলি, বোমা, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ছুড়তে থাকেন। জাহাঙ্গীরের হাতে থাকা অস্ত্রের গুলিতে শামীম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।
ওবায়দুল কাদের ছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্ল্যাহ, পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, জেবুন্নেসা হক ও সিমিন হোসেনকে (রিমি) মামলায় আসামি করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, দীপু মনি, মাহবুব উল আলম হানিফ, কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াশিকা আয়শা খান, আইন সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হীরু, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদসহ ৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে।
একই মামলায় সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও শাজাহান খান, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নিক্সন চৌধুরী ও সোলায়মান সেলিমকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, ঢাকা মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ, ঢাকা রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি সৈয়দ নুরুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত আইজি বনজ কুমার, যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার, এস এম মেহেদী হাসানসহ ৪৬ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।