জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেছেন, বাংলাদেশে ক্ষমতা হস্তান্তর শান্তিপূর্ণ হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও মানবাধিকার দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। কয়েকশ লোককে হত্যা ও কয়েক হাজার মানুষকে আহত করার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সোমবার এক বিবৃতিতে একথা বলেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
ফলকার টুর্ক বলেন, ‘পরিবর্তনটা অবশ্যই স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলকভাবে পরিচালিত হতে হবে এবং সকল বাংলাদেশিদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের স্বার্থে তা যেন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও উন্মুক্ত হয়। আর কোনো সহিংসতা বা প্রতিহিংসা থাকা উচিত নয়।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল জরুরি ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক আইনের পরিধির মধ্যে কঠোরভাবে সীমিত রাখতে হবে। নির্বিচারে আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে মুক্তি দিতে হবে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী সকলকে অবশ্যই জবাবদিহি করার বিষয়ে তিনি জোর দিয়েছেন। সংকটের অন্তর্নিহিত বিষয় এবং অভিযোগগুলোর অবশ্যই সমাধান করা উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই থেকে সংঘটিত সব মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার বিস্তৃত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন ফলকার টুর্ক। কারণ ওই সময় থেকে প্রাথমিকভাবে সরকারি চাকরির জন্য কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে পরিচালিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে সহিংসতা এবং কর্তৃপক্ষের নৃশংস বলপ্রয়োগের ঘটনা ঘটে।
ফলকার টুর্ক বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ করে জনগণের আস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাধীনভাবে তদন্ত হওয়া উচিত। এই কাজে সহায়তার জন্য আমার দপ্তর তৈরি আছে।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, ‘ন্যায়বিচার ও সংস্কারের দাবিগুলো অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই পর্বে এসে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের প্রতি বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা অন্তর্বর্তীকালীন কর্তৃপক্ষ এবং সকল রাজনৈতিক নেতাদের জন্য একটি পথনকশা হিসেবে কাজ করতে পারে।
বাংলাদেশে অবিলম্বে সহিংসতার অবসানের পাশাপাশি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন ফলকার টুর্ক।