সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের সম্পাদক প্রার্থী রুহুল কুদ্দুস গ্রেপ্তার

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি–সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুস

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোট গণনা নিয়ে হট্টগোল ও মারামারির মামলায় বিএনপি-সমর্থিত প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী মো. রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রাজধানীর তোপখানা রোড থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা জোনের (গোয়েন্দা বিভাগ) অতিরিক্ত উপকমিশনার আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট গণনাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনায় করা মামলার এজাহার নামীয় আসামি রহুল কুদ্দুসকে আটক করার তথ্য জেনেছেন।

আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি সন্ধ্যায় তোপখানা রোডের চেম্বার থেকে বের হওয়ার পর পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেছে তাঁর এক সহকর্মীর বরাত দিয়ে কায়সার কামাল জানিয়েছেন।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে দুই দিনের ভোট গ্রহণ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলেও ভোট গণনা নিয়ে শুক্রবার ভোরের দিকে দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ওই দিন ভোট গণনা বন্ধ হয়ে যায়। আজ শনিবার বিকেলে আবার ভোট শুরু হয়েছে।

হট্টগোল ও মারধরের ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ (এস আর সিদ্দিকী সাইফ)। মামলায় তাঁকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনেছেন সাইফুর রহমান। সেখানে আইনজীবী নাহিদ সুলতানাকে (যুথী) প্রধান এবং রুহুল কুদ্দুসকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়। নাহিদ সুলতানা যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী। মামলা হওয়ার পর নাহিদ সুলতানাকে গ্রেপ্তারে কয়েক দফায় তাঁর ধানমন্ডির বাসায় অভিযান চালালেও তাঁকে পাওয়া যায়নি বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় এর আগে সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী বশির আহমেদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গ্রেপ্তার অন্য চারজন হলেন আইনজীবী ওসমান চৌধুরী, হাসানুজ্জামান, তরিকুল ইসলাম ও এনামুল হক।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বিকেলে গণমাধ্যমে একটি লিখিত বিবৃতি পাঠান। তাতে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ৮ মার্চ (শুক্রবার) ভোরে সমিতির মিলনায়তনের ভেতরে নৈরাজ্যকর ঘটনা আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক ও নাহিদ সুলতানার সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও ওই ঘটনায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী তিনি ও আরও তিনজন আইনজীবী নেতাকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা ওসমান চৌধুরীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের বাড়িতে বা চেম্বারে হানা দেওয়া হচ্ছে। এমন আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে যে কোনো আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারছেন না। এমন একটা ভয়াবহ পরিস্থিতে ২০২২ ও ২০২৩ সালের সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ও সদ্য সমাপ্ত ঢাকা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ন্যায় নিজেদের পছন্দমতো ব্যক্তিদের নাম বিজয়ী ঘোষণা করা হতে পারে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতেই ভোট গণনা করা হবে কি না, তা নিয়ে শুক্রবার ভোরে আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে কয়েকজন প্রার্থীর মধ্যে বাদানুবাদ, হট্টগোল ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এতে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এস আর সিদ্দিকী সাইফসহ কয়েকজন আইনজীবী আহত হন।