প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে উড়োচিঠি দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ করেছিলেন এক ব্যক্তি। এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আজ বিভাগে আসেন উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতারসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পরীক্ষা স্থগিতের সুপারিশ করেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সূত্র জানায়, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর। আজ ওই বিভাগের ৪১৯ নম্বর কোর্সের পরীক্ষা ছিল। এটিই এই বর্ষের শেষ পরীক্ষা।
গতকাল বিকেলে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে একটি উড়োচিঠি আসে। এই চিঠিতে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সব কোর্সের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, একজন শিক্ষক তাঁর অনুগত শিক্ষার্থীকে সুবিধা দেওয়ার জন্য প্রশ্নপত্র ফাঁস করছেন। এতে আজ অনুষ্ঠিতব্য প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়।
পরে এই প্রশ্নপত্র নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আলাউদ্দিন মজুমদার ও ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে আসেন। পরে আজকের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে গতকাল চিঠিতে দেওয়া প্রশ্নপত্রের হুবহু মিল পান। এরপর উপাচার্য পরীক্ষা স্থগিত করার আদেশ দেন।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিঠিতে কারও নাম ছিল না। যেহেতু অভিযোগ ছিল, তাই তাঁরা সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য বিভাগে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে প্রশ্নপত্রের সঙ্গে অভিযোগে দেওয়া প্রশ্নপত্রের শতভাগ মিল পান। পরে পরীক্ষা কমিটি এই পরীক্ষা স্থগিত করে।’
জানতে চাইলে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ জরুরি সিন্ডিকেট ডাকা হয়েছে। বিকেল পাঁচটায় এ সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সভা শেষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
জানতে চাইলে চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আলী আজগর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। কম্পোজ করার সুবিধার্থে প্রশ্নটি গুগল ড্রাইভে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে এটি বেহাত হয়েছে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।’
বিভাগের সভাপতি রওশন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরীক্ষা কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কমিটি পরীক্ষাটি স্থগিত করেছে। পরবর্তী পরীক্ষার সূচি যথাসময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।’