রাজধানীর বনানীতে নকশাবহির্ভূতভাবে হোটেল সারিনা নির্মাণের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার দুদকের উপপরিচালক সেলিনা আখতার বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (১) মামলাটি করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন হোটেল সারিনার চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার, ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাবেরা সরোয়ার ও রাজউকের ভবন পরিদর্শক আওরঙ্গজেব (নান্নু)।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের মালিকানাধীন বনানী এলাকার ১৭ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর প্লটটি উন্নয়নের নামে পার্শ্ববর্তী ২৫ নম্বর প্লটটি ক্রয় করেন। সেখানে অনুমোদিত নকশা না মেনে দুটি প্লটে ২২ তলা ও ২১ তলা ভবন নির্মাণ শেষে পাঁচ তারকা হোটেল সারিনা ইন লিমিটেড পরিচালনা করেন।
দুদক বলছে, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী তাহেরা খসরু আলমের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শেষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিশন কর্তৃক নির্দেশ প্রদান করা হয়। তাঁদের দাখিলকৃত সম্পদবিবরণী যাচাইকালে দেখা যায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী বনানীর ১৭ নম্বর রোডের ২৭ ও ২৫ নম্বর প্লটে অবস্থিত হোটেল সারিনার অংশীদার ছিলেন। জব্দকৃত এবং সংগৃহীত নথিপত্রে দেখা যায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রী যৌথভাবে ভায়রা গোলাম সরোয়ার ও শ্যালিকা সাবেরা সরোয়ারের সঙ্গে সারিনার ব্যবসায় যুক্ত থাকার বিষয়টি গোপন করেছেন।
এ ছাড়া আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁর ভায়রা গোলাম সরোয়ার বনানীর ১৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর প্লটটি যৌথ নামে কেনেন। সেখানে রাজউকের অনুমোদিত ১৫ তলা নকশার স্থলে ২১ তলা ভবন নির্মাণ করেন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সভাপতি এবং সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে পরিকল্পিতভাবে প্রথমে নিজের ভায়রাকে দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের (সিএসই) বর্ণিত ২৭ নম্বর প্লটের ডেভেলপার নিযুক্ত করেন। পরে সেখানে নিজে এবং স্ত্রীসহ যুক্ত হয়ে প্লটটি আত্মসাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন।
সবার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪২০ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন (২ নম্বর আইন)–এর ৫ (২) ধারায় মামলা করা হয়।
যা বললেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে সারিনায় আমার কোনো মালিকানা নেই। আমি এবং আমার স্ত্রী প্রায় ১২ বছর আগে অংশীদারত্ব ছেড়ে দিয়ে বিদায় হয়ে গেছি। যে অভিযোগে মামলা করা হয়েছে, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যে চুক্তি হয়েছে, এর সবকিছু নিয়মমাফিক হয়েছে।’
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে হেরে গেছে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সরকার এই পথ বেছে নিয়েছে। এই পথে গিয়ে তারা টিকে থাকার চেষ্টা করছে।