যোগাযোগে নতুন দিন

কম সময়ে যাতায়াতের সুযোগ এনেছে ২০২২

বিদায়ী ২০২২ সাল যোগাযোগ খাতে অনেক সুখবর দিয়েছে। এর রেশ হয়তো এ বছরও থাকবে।

উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু হয় গত ২৮ ডিসেম্বর। ওই দিন রাজধানীর মিরপুরের তালতলা এলাকা থেকে তোলা ছবি
তানভীর আহাম্মেদ

রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও—পৌনে ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া যাচ্ছে ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে। যানজটের নগরী ঢাকার মানুষকে কয়েক মাস আগে বললেও এটা তাঁরা বিশ্বাস করতে চাইতেন না।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। সড়কপথে এখন ঢাকা থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে যাওয়া যাচ্ছে। অথচ লঞ্চে বরিশাল যেতে সারা রাত লাগে। ফেরিতে পার হলে কখনো কখনো ১০ ঘণ্টা বা এরও বেশি সময় সড়কে কাটাতে হয়। আর ফেরিঘাটের ভোগান্তি, হকারের উৎপাত, ব্যাগ-বোঁচকা নিয়ে টানাহেঁচড়া তো আছেই। এখন কম সময়ে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যাওয়া যাচ্ছে পদ্মা সেতু দিয়ে। বিশেষজ্ঞ থেকে সাধারণ মানুষ সবাই স্বীকার করছেন, পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেল দেশের যোগাযোগব্যবস্থাকে নতুন যুগে নিয়ে গেছে।

বাস্তবায়নাধীন ১০টি বড় উন্নয়ন প্রকল্পকে অগ্রাধিকারের তালিকায় (ফাস্ট ট্র্যাক) রেখেছে সরকার। এর মধ্যে যোগাযোগ খাতের প্রকল্পগুলো হচ্ছে পদ্মার দুই পারে রেলসংযোগ স্থাপন ও মেট্রোরেল। চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল অগ্রাধিকারের তালিকায় না থাকলেও এটি বড় ও ব্যতিক্রমী প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত।

পদ্মা সেতু চালু হয়েছে গত ২৫ জুন। আর ২৮ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেট্রোরেল উত্তরা-আগারগাঁও পর্যন্ত চলছে। কর্ণফুলীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের আগামী ফেব্রুয়ারিতে চালুর পরিকল্পনা আছে। আগামী জুনে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত রেললাইন চালুর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর দুই পাড় জুড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এরই মধ্যে সরকার গত নভেম্বরে এক দিনে সারা দেশে ছোট-বড় ১০০ সেতু চালু করেছে। ডিসেম্বরে ১০০টি জাতীয় মহাসড়কে দুই হাজার কিলোমিটার নতুন সড়ক একই দিনে উদ্বোধন করা হয়।

এই থেকেই বোঝা যায়, বিদায়ী ২০২২ সাল যোগাযোগ খাতে অনেক সুখবর দিয়েছে। এর রেশ হয়তো আগামী বছরও থাকবে। তবে এসব সেতু, সড়ক ও রেল যোগাযোগে স্বস্তি আনলেও মানুষের মনে কিছু প্রশ্ন-সন্দেহ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কেননা, একটি প্রকল্পও সময়মতো এবং নির্ধারিত ব্যয়ের মধ্যে শেষ করা হয়নি। এর ফলে মানুষ যে সময়ের মধ্যে এর সুফল ভোগ করতে পারত, তা থেকে অনেক পরে সেই ফল পাচ্ছে। সরকারের কোষাগার খালি করা এবং বিদেশি ঋণের বোঝা বাড়ানোর বিষয়টিও আলোচনার দাবি রাখে।

২০০৭ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্প গ্রহণের পর তা চালু হতে ১৫ বছর লেগেছে। ব্যয় বেড়েছে ২২ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। ২০১২ সালে নেওয়া মেট্রোরেল প্রকল্প এক দশক পর আংশিক চালু হয়েছে। ব্যয় বেড়েছে ১১ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকা। নগরবাসী দীর্ঘদিন নির্মাণকাজের জন্য ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু টানেলের নির্মাণকাজ নির্ধারিত সময়ে সম্ভব না হলেও বেশি দেরি হচ্ছে না। তবে প্রকল্পের ব্যয় দুই হাজার কোটি টাকা বাড়ছে।

দুই যুগের স্বপ্ন এখন বাস্তব

পদ্মা সেতু শুধু যে যাত্রার সময় কমাচ্ছে, তা–ই নয়। গত ২৫ জুন চালু হওয়ার পর পদ্মা সেতু দিয়ে ২৭ লাখের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। টোল থেকে সরকারের আয় হয়েছে ৪০০ কোটি টাকার বেশি। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ হাজার যানবাহনের চলাচল থেকে বোঝা যায়, ওই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকাও ঘুরছে। এর মধ্যে বাগেরহাটসহ দক্ষিণাঞ্চলের তাজা মাছ কম সময়ে ঢাকার বাজারে চলে আসার প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। স্থানীয় অনেক পণ্য এখন কম সময়ে ঢাকায় আসছে। শিল্পোদ্যোক্তারা কারখানা করার লক্ষ্যে জমি কিনছেন দেদার। ফলে জমির বাজার ব্যাপক গরম হয়েছে।

অথচ এই পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর এর সুফল পেতে লেগেছে দুই যুগের মতো। ১৯৯৯ সালের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু হয়। ২০০১ সালের ৪ জুলাই সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ২০০৩-০৫ সালের মধ্যে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার কাজ করে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার।

পদ্মা সেতু নির্মাণে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রকল্প নেয় ২০০৭ সালে। ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। চার বছরে নির্মাণ করার কথা। কিন্তু নানা জটিলতায় কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালে। শেষ পর্যন্ত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলাকে ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। সমীক্ষায় এসেছিল, সেতুটি চালুর পর দেশের জিডিপির হার বাড়াবে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়াবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। তবে এই প্রভাব কতটা অর্জিত হলো, তা পরে মূল্যায়নে স্পষ্ট হবে।

যানজটের শহরে স্বস্তির মেট্রোরেল

পদ্মা সেতুর মতো মেট্রোরেল চালুর পরও একধরনের আবেগতাড়িত যাত্রা (ইমোশনাল রাইড) দেখা গেছে। ১০ মিনিটের যাত্রার টিকিট কাটার জন্য দুই ঘণ্টা পর্যন্ত মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেছে। মেট্রোরেলে উঠে ছবি তোলা, ভিডিও করা, পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের ঘটনা কদিন জোরেশোরে চলে। দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ মেট্রোরেল দেখতে, চড়তে আসেন।

রাজধানীর লক্কড়ঝক্কড় ও জীর্ণ বাসের বিপরীতে জাপানে তৈরি মেট্রোরেলের কোচগুলো অত্যাধুনিক। তিনতলা মেট্রোরেল স্টেশনে ওঠানামার জন্য সিঁড়ি, চলন্ত সিঁড়ি (এস্কেলেটর) ও লিফট রয়েছে। ট্রেন ও স্টেশন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত (এসি)।

চলতি বছর (২০২৩) ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু করা হবে। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে সময় লাগবে আগামী বছর পর্যন্ত। পুরোটা চালু হলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দৈনিক ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। এই পথ যেতে সময় লাগবে ৩৮ মিনিট।

মেট্রোরেলের প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালে, কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি)। এরপর মাস গেছে, বছর গেছে, যুগ গেছে, মানুষের অপেক্ষা শুধু বেড়েছে। ২০১২ সালে প্রথম প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে দেখা গেল, বেগম রোকেয়া সরণিতে সড়কের মাঝখানে কংক্রিটের ব্লকের বেড়া দিয়ে শুরু হয়েছে মেট্রোরেলের কাজ। ছয় বছর পর মেট্রোরেল চলাচল শুরু করল।

চালু হওয়া মেট্রোরেল প্রকল্পটির নাম এমআরটি লাইন-৬। উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এর দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটারের বেশি। এর মধ্যে ১৭টি স্টেশন থাকছে। গত ২৮ ডিসেম্বর চালু হয়েছে সাতটি স্টেশনের মধ্যে। শুরুতে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এখন ব্যয় বেড়ে হয়েছে ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা।

দেশের প্রথম টানেল চালুর অপেক্ষায়

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি নতুন সংযোজন। টানেলে দুটি টিউব (সুড়ঙ্গ) রয়েছে। এর মধ্যে আনোয়ারা থেকে চট্টগ্রাম শহরে আসার টিউবের পূর্ত কাজ শেষ হয়েছে। আর চট্টগ্রাম থেকে আনোয়ারার দিকে চলাচলের টিউবটির কাজ শেষ পর্যায়ে।

নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল এটি। কর্ণফুলীর দুই তীরকে সংযুক্ত করে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই টিউবসংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার।

কর্ণফুলী নদী চট্টগ্রাম শহরকে দুই ভাগে বিভক্ত করেছে। এক ভাগে রয়েছে নগর ও বন্দর এবং অন্য ভাগে রয়েছে ভারী শিল্প এলাকা। কর্ণফুলী নদীর ওপর ইতিমধ্যে তিনটি সেতু নির্মিত হয়েছে। তবে তা যানবাহনের চাপ সামলাতে যথেষ্ট নয়। এর বাইরে কক্সবাজার পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, একে ঘিরে পর্যটন বাড়ছে। এর মধ্যে মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে। মাতারবাড়ীতে চলছে গভীর সমুদ্রবন্দর ও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকাজ।

সব মিলিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে। চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল হবে। কর্ণফুলী নদীর এই দুই পারের কর্মযজ্ঞ বিবেচনায় নিয়ে নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের প্রকল্প নেওয়া হয়, যা চট্টগ্রাম শহর ও আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করবে।

২০১৪ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও চীনের সরকারি পর্যায়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়। নকশা ও অন্যান্য কাজ শেষে ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা। শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল আট হাজার কোটি টাকা।

১০০ সেতু

বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোকে ‘স্মার্ট হাইওয়ে’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এ জন্য সারা দেশের নদী-খাল-বিলের দুই পাড়ের সংযোগ ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনগ্রসর অঞ্চলগুলোকে যোগাযোগকাঠামোতে আনার চেষ্টা চলছে।

এর অংশ হিসেবে গত ৭ নভেম্বর সারা দেশে এক দিনে ‘শত সেতু’ উদ্বোধন করা হয়। এসব সেতুর সবচেয়ে বড়টি সুনামগঞ্জের রানীগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর ওপর নির্মিত হয়েছে, যা ৭০২ মিটার দীর্ঘ। এই সেতুর ফলে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের দূরত্ব ৩৮ কিলোমিটার কমে গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বাকি সেতুগুলোর বেশির ভাগই ১৫০ মিটার বা এর কম দীর্ঘ।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অধীনে নির্মিত এসব সেতু দেশের সাতটি বিভাগের ২৫টি জেলায় হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ৪৬টি ছোট-বড় সেতু নির্মিত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এর মধ্যে পার্বত্য জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি—৪৪টি। সব কটি সেতু একসঙ্গে জোড়া দিলে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ হবে।

সওজ বলছে, এসব সেতুর নকশা প্রণয়ন করেছে নিজেরাই। নদীর স্বাভাবিক পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার দিকটি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেতুগুলো নির্মাণে প্রায় ৮৮০ কোটি টাকার পুরোটা সরকারের রাজস্ব খাত থেকে খরচ করা হয়েছে।

এর বাইরে আরও ১১৮টি ছোট-বড় সেতু নির্মাণাধীন। এগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটারের বেশি। এগুলো চলতি বছরের মধ্যে চালুর পরিকল্পনা আছে।

১০০ সড়ক

শত সেতুর পর সর্বশেষ গত ২১ ডিসেম্বর দেশের ১০০ সড়কের অংশবিশেষ নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব উন্নয়ন করা সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ২ হাজার ২১ কিলোমিটার। এর বেশির ভাগই গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক।

সওজের তথ্য অনুসারে, দেশের আটটি বিভাগের ৫০টি জেলায় বিস্মৃত এসব সড়ক। মোট ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১৪ হাজার ৯১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়ন করা হয়েছে। এই ব্যয়ের বেশির ভাগ অর্থের জোগান দিয়েছে সরকার।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মহাসড়কটি সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে, যা জয়দেবপুর-চন্দ্রা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক নামে পরিচিত। দুই পাশে স্থানীয় যানবাহনের যাতায়াতের ব্যবস্থাসহ মহাসড়কটির প্রায় ৭০ কিলোমিটার চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। সবচেয়ে ছোট ইজতেমা সড়কের দৈর্ঘ্য ১ দশমিক ৩ কিলোমিটার।

উন্নয়ন করা সড়কের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়েছে ঢাকা বিভাগে, প্রায় ৬৫৪ কিলোমিটার। জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি সড়ক উন্নয়ন হয়েছে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামে।

আশির দশকে দেশের যোগাযোগ খাতে বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণের ধারা শুরু হয়েছিল। গত এক যুগে এই খাতে বিনিয়োগ আরও বেড়েছে। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন, পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে সরকার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের বিষয়টি দেশে-বিদেশে আলোচিত হয়েছে।

মেট্রোরেলের একাংশ চালুর মাধ্যমেও ঢাকার মানুষের মধ্যে একধরনের সাড়া ফেলা গেছে। আগামী নির্বাচনের আগে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর সিদ্ধান্ত আছে। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হয়ে যাবে। এসব উন্নয়নের মাধ্যমে আগামী সংসদ নির্বাচনে মানুষের মন জয় করার চেষ্টা করবে সরকার।