যত দোষ নন্দ ঘোষ: চট্টগ্রামের মেয়র

পানিতে তলিয়েছে রাস্তা। এর মধ্যেই যাত্রী নিয়ে চলছে রিকশা
ছবি: জুয়েল শীল

নগরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সমন্বয় করছে না অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানালেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, এই প্রকল্পে সিটি করপোরেশনের ভূমিকা নেই। এরপরও মানুষজন সিটি করপোরেশনকে গালিগালাজ করছে।

নগরের জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে রোববার সকালে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন মেয়র রেজাউল করিম। তিনি লেখেন, ‘তারা (সিডিএ) করপোরেশনকে কোনো কিছুই জানায়নি। ইচ্ছামতো কাজ করছে। এত বড় একটি প্রকল্প, চট্টগ্রামবাসীর বাঁচা-মরারও প্রশ্ন, এরপরও তারা সমন্বয় করছে না।’

ডুবে গেছে দোকানপাট। নগরীর চকবাজার বাদুড়তলা সড়ক

ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে পরপর তিন দিন ডুবেছে চট্টগ্রাম নগর। রাতভর বৃষ্টিতে গত শুক্রবার জলাবদ্ধতা হয়। রোববারও নগরের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এর আগের দিন শনিবারও একই অবস্থা ছিল। অন্তত ৫০টি এলাকায় জলাবদ্ধতা হয়। এসব এলাকায় ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি জমে ছিল। এভাবে জলাবদ্ধতা হওয়ায় নগরের লোকজন কষ্টে আছেন।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

ঘরে পানি ঢোকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন নগরবাসী

প্রকল্পটি নিয়ে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, ‘যত দোষ নন্দ ঘোষ, সব মেয়রের দোষ। কিন্তু এ মেগা প্রকল্পে তো মেয়রের সংশ্লিষ্টতা নেই। এই প্রকল্পে কিছু করার মতো ক্ষমতাও নেই মেয়রের।’

শুধু খালের দুই পাড়ে প্রতিরোধ দেয়াল দিলে কিছু হবে না মন্তব্য করে মেয়র বলেন, খাল থেকে মাটি তুলতে হবে। চান্দগাঁও, বাকলিয়াসহ আশপাশের এলাকায় ভরাট থাকা খাল দিয়ে ঠিকভাবে পানি যেতে পারছে না। এখানে চাক্তাই, বীর্জা খালসহ অন্য খালগুলোও পরিষ্কার করতে হবে।

রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘তারা (সিডিএ) একেকটা খাল কত গভীর করেছে, সেটা জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। সিডিএর প্রকল্পের ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) ৯ কোটি কিউবেক মাটি উত্তোলনের কথা আছে। সে পরিমাণ মাটি তুলেছে? মাটি উত্তোলন করা না হলে প্রকল্পের সাফল্য আসবে না।’

সিডিএকে সমন্বয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল জানিয়ে তিনি লিখেছেন, কিছুদিন আগে সমন্বয় সভায় বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক, প্রকৌশলী, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সিটি করপোরেশন ও সিডিএর সমন্বয়ে যৌথ একটি দল গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হলেও সিডিএ এ বিষয়ে কিছুই জানায়নি।

মেয়র বলেন, ‘সিডিএর প্রকল্পে সিটি করপোরেশনের হাত নেই। কিন্তু মানুষ করপোরেশনকে গালিগালাজ করছে। আমি সিটি কাউন্সিলরদের সঙ্গে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য বলেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কাউন্সিলরকে ডেকেছে? সিডিএ নিজেদের মতো কাজ করছে।’