প্রথম আলোতে গতকাল শনিবার প্রকাশিত ‘বিদ্যুৎ খাতে “অপচুক্তি”‘, “লুটেরা মডেল”’ শিরোনামের প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। বিভাগের পরিচালক (সেক্টর-১) মোহাম্মদ মাহিদুর রহমান প্রতিবাদপত্রে সই করেছেন। গতকাল পাঠানো প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, প্রতিবেদনে আইএমইডির নামে প্রকাশিত বক্তব্যগুলো প্রকৃতপক্ষে তাদের নয়।
বক্তব্যগুলো একটি ইংরেজি দৈনিকের বাংলা অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত একজন কলাম লেখকের মতামত। প্রতিবাদপত্রের সঙ্গে ওই কলাম লেখকের প্রবন্ধের ‘স্ক্রিনশট’ সংযুক্ত করা হয়।
প্রতিবাদপত্রে আরও বলা হয়, প্রবন্ধটিতে উল্লিখিত তথ্য ও মতামত গবেষণার প্রয়োজনে অন্যান্য প্রবন্ধ ও বিদ্যুৎ বিভাগের বিভিন্ন প্রকাশনার তথ্যের সঙ্গে যাচাইয়ের জন্য আইএমইডিতে সংরক্ষিত ছিল। এটি আইএমইডির গবেষণায় প্রাপ্ত কোনো ফলাফল নয়। একজন ব্যক্তির মনগড়া একটি প্রতিবেদন আইএমইডির গবেষণা প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির কোনো সুযোগ নেই। এটি মূল গবেষণা প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি। কিন্তু কলাম লেখকের মতামত হুবহু আকারে গবেষণা প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে আইএমইডির ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়া (আপলোড) করা হয়।
কীভাবে প্রবন্ধের মতামত আইএমইডির গবেষণা প্রতিবেদনের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, তা খুঁজে বের করার লক্ষ্যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয় প্রতিবাদপত্রে। এতে জানানো হয়েছে, আইএমইডির চূড়ান্ত করা গবেষণা প্রতিবেদন ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদটি ভিত্তিহীন, মনগড়া, বানোয়াট ও তথ্যভিত্তিক নয় বলে উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সরকার গত দেড় দশকে দেশের বিভিন্ন খাতে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে, যার মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের সাফল্য যুগান্তকারী। এ সময়ে দেশের প্রতি ঘরে সরকার বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে, যা অতীতে কোনো সরকার করতে পারেনি।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বিভাগ আইএমইডির ‘বিদ্যুৎ সেক্টরভুক্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন’-এর ওপর ভিত্তি করে। গবেষণাটি করেছেন আইএমইডির পরিচালক (সেক্টর-১) ও উপসচিব মোহাম্মদ মাহিদুর রহমান। প্রতিবেদনে উপদেষ্টা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এস এম হামিদুল হকের নাম, যিনি ওই শাখার প্রধান ও সরকারের একজন অতিরিক্ত সচিব। মাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ৫৮ পৃষ্ঠার গবেষণা প্রতিবেদনটি গত মাসে জমা দেওয়া হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনের পঞ্চম অধ্যায়ের একটি পরিচ্ছেদে (৫.২/পৃষ্ঠা ৪৯ থেকে ৫২) বিদ্যুৎ খাতের কেন্দ্রভাড়া বা ক্যাপাসিটি চার্জ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন বিষয়ে পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়। এর শিরোনাম ছিল ‘বিদ্যুৎ খাতের সমস্যা ও সম্ভাবনা এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’।
প্রতিবাদপত্রেই উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতিবেদনটি আইএমইডির ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছিল। বিভাগটির ওয়েবসাইটে সর্বশেষ গতকাল নতুন করে ‘বিদ্যুৎ সেক্টরভুক্ত প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়ন অগ্রগতিবিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন’ শিরোনামের যে প্রতিবেদন তোলা হয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদটি (৫.২) পুরো বাদ দেওয়া হয়েছে।