সুজন রংপুরের সভাপতির সাক্ষাৎকার

ইভিএমের প্রতি ভোটারদের অনাস্থা বেড়েছে

গতকাল মঙ্গলবার তৃতীয়বারের মতো রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। ভোটারদের পক্ষ থেকে দিনভর ইভিএম নিয়ে ভোগান্তির অভিযোগ ছিল। নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মোস্তাফিজার রহমান মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চতুর্থ হয়েছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম। নির্বাচনে ইভিএম নিয়ে ভোগান্তি, আওয়ামী লীগের ভরাডুবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলের উত্থানসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সামছুর রহমানআরিফুল হক

রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম।
রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি খন্দকার ফখরুল আনাম।
প্রশ্ন

রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে। সার্বিকভাবে নির্বাচন কেমন হয়েছে বলে মনে করেন?

ফখরুল: শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়নি। ভোটারদের দুর্ভোগ ছিল। দ্বিতীয়বারের মতো মোস্তাফিজার রহমান মেয়র নির্বাচিত হলেন। তাঁকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আওয়ামী লীগের সমন্বয়হীনতা, পরিকল্পনাহীনতা লক্ষণীয়। নিবন্ধিত সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন জরুরি।

প্রশ্ন

এবার রংপুর সিটির সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট নেওয়া হয়েছে। দিনভর ভোটারদের চরম ভোগান্তি হয়েছে ইভিএমে। এই ইভিএম নিয়ে সুজনের পক্ষ থেকে আগেই শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। নির্বাচনে ইভিএমের পরিস্থিতি দেখে আপনার মন্তব্য কী?

ফখরুল: ইভিএমের প্রতি আস্থা অর্জনে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ হয়েছে। ইভিএম হ্যাং হয়ে যাওয়া, ধীরগতিসহ নানা জটিলতা ছিল। তাই ভোটারদের মধ্যে ইভিএম নিয়ে অনাস্থা বেড়েছে।

প্রশ্ন

নৌকার প্রার্থী বিপুল ব্যবধানে পরাজিত। ২০১৭ সালে রংপুর সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচনের চেয়ে নৌকার প্রার্থীর ভোট অনেক কমেছে। আওয়ামী লীগের ভোট এত কমল কেন?

ফখরুল: আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচন, আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনসহ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা, পরিকল্পনার অভাব, প্রচার-প্রচারণায় শৈথিল্য ভরাডুবির পেছনে কাজ করেছে। দলীয় ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ভোট ব্যবধান বেড়েছে।

প্রশ্ন

নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী প্রায় ৫০ হাজার ভোট অর্থাৎ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। হাতপাখার প্রার্থীর এত ভোট পাওয়ার পেছনে বিশেষ কোনো কারণ আছে কি?

ফখরুল: স্থানীয় আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয়তা, বিচক্ষণতার অভাব, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক চেতনা থেকে সরে যাওয়া রংপুরে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোকে সংগঠিত করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মতো দলের উত্থান ভবিষ্যতে অশনিসংকেত বটে।

প্রশ্ন

নির্বাচিত মেয়র তাঁর ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসব প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়নযোগ্য? মেয়রের কাছ থেকে প্রত্যাশা কী?

ফখরুল: নির্বাচনের আগে প্রার্থীরা ইশতেহারে তথাকথিত কিছু প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচনের পর সেগুলো আর বাস্তবায়িত হয় না। নির্বাচনে ইশতেহার বা প্রতিশ্রুতি যা-ই থাকুক না কেন, নগরবাসীর প্রত্যাশা পরিকল্পিত নগর, শ্যামাসুন্দরী খালসহ বর্ধিত এলাকার উন্নয়ন। মেয়রের জন্য তাঁর দেওয়া এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন বড় চ্যালেঞ্জ।