তফসিলের আগে ভোটের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে থাকব: সিইসি

সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে
ছবি: প্রথম আলো

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে তাঁরা ভোটের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করতে থাকবেন।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন হাবিবুল আউয়াল।

সিইসিকে প্রশ্ন করা হয়, তফসিলের আগে ইসির যেহেতু কাজ করার সুযোগ আছে, তাহলে তাঁরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে কি কাজ শুরু করেছেন? বিরোধী দলগুলো বলছে, ভোটের পরিবেশ এখন নেই।

জবাবে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, খুব জটিল প্রশ্ন। তিনি এখন এই মুহূর্তে উত্তর দিতে পারবেন না। ভোটের পরিবেশ তাঁরা নিশ্চয়ই পর্যবেক্ষণ করতে থাকবেন। এটাকে বলে প্রক্ষেপণ। নির্বাচন তিন মাস, চার মাস, ছয় মাস পরে হবে। কিন্তু তাঁদের পর্যবেক্ষণ ও প্রক্ষেপণ অবশ্যই সজাগ রাখতে হবে।

উদাহরণ হিসেবে হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, মনে করুন, কাল জেলা প্রশাসকেরা একটা অ্যাসোসিয়েশন করলেন। তাঁরা সবাই ঢাকা এসে বললেন, এবার একটা বিশেষ দলকে ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন। নির্বাচন আরও ছয় মাস পর। ইসি কি নিশ্চুপ হয়ে বসে থাকব? সেখানে তাঁদের তো একটি নির্দেশনা দিতে হবে যে তাঁরা এভাবে আচরণ করতে পারেন না। কারণ, জেলা প্রশাসক গুরুত্বপূর্ণ পদ। অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করতে হয়। পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি তাঁদেরই দেখতে হয়। তাই কোনোভাবেই ইসি চাইবে না, কোনো জেলা প্রশাসকের আচরণে পক্ষপাত প্রতিফলিত হোক। এটা ইসি কখনোই চাইবে না।

জামালপুরের ডিসিকে প্রত্যাহারের মতো কোনো উদ্যোগ ইসি ভবিষ্যতে নেবে কি না—এমন প্রশ্নে সিইসি বলেছেন, যদি তাঁদের কাছে এ রকম কিছু প্রতীয়মান হয়, তাঁরা নিশ্চয়ই তখন এই ধরনের উদ্যোগ নেবেন।

হাবিবুল আউয়ালের কাছে প্রশ্ন করা হয়, ইসি তার রোডম্যাপে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করা। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

এখন কেউ ভোট চাইতে পারবেন কি না, সিইসির কাছে এমন প্রশ্ন করা হয়। জবাবে সিইসি বলেন, এই প্রশ্নের উত্তর তিনি এখন দিচ্ছেন না।

হাবিবুল আউয়ালের কাছে প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলছেন, তফসিলের আগেও নির্বাচনের পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের কিছু করার সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে যখন প্রধানমন্ত্রী সফরে বা রাষ্ট্রীয় কোনো কাজে যাচ্ছেন, সরকারি কাজে যাওয়ার পরও যখন ভোট চাইছেন, সেখানে কমিশনের কি কথা বলার এখতিয়ার আছে?

এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, এ প্রশ্নের উত্তর এই মুহূর্তে চট করে তিনি দিতে পারবেন না। এখন সবাই নির্বাচন নিয়ে কথা বলছে। বিএনপি কথা বলছে, আওয়ামী লীগ কথা বলছে, জাতীয় পার্টি কথা বলছে। সবাই কথা বলছে নিজেদের দৃষ্টিকোণ থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, ‘আপনারা আমাকে ছাড়া আর কাউকে ভোট দেবেন না’, তাহলে নিশ্চয়ই তারা (ইসি) হস্তক্ষেপ করতে পারবে। কিন্তু এখন সবাই ভোট চাইছে। তাই এই বিষয় তারা সেভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেনি।

সম্প্রতি সুধীজনদের সঙ্গে ইসির সংলাপের অর্জন সম্পর্কে হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, তাঁরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করেন। দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা তাঁদের একটা দায়িত্ব। নির্বাচন কমিশনের ওপর যেমন দায়িত্ব রয়েছে, তেমনি সরকারের ওপর দায়িত্ব রয়েছে, রাজনীতিবিদদের ওপর দায়িত্ব রয়েছে, আরও অনেকের ওপর দায়িত্ব রয়েছে। তাঁর মনে হয়, এই সংলাপের মাধ্যমে কিছুটা হলেও প্রত্যেকের ওপর একটা দায়িত্ববোধ বা একটা চাপ সৃষ্টি হতে পারে।