রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষে হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। আজ বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক পোস্টে সভা-সমাবেশের অধিকার রক্ষায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
পিটার হাস বলেছেন, ‘ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়-ভীতি দেখানোর খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়-ভীতি দেখানো থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের কর্মসূচি আছে। এ গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বিতর্ক-আলোচনার মধ্যেই গতকাল বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে নয়াপল্টন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে মকবুল আহমেদ নামের বিএনপির এক কর্মী নিহত হন। আহত হন দলটির অর্ধশত নেতা-কর্মী।
সংঘর্ষের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে দলের কেন্দ্রীয় নেতা রুহুল কবির রিজভী, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, শিমুল বিশ্বাস, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়াসহ কয়েক শ নেতা-কর্মীকে আটক করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা–কর্মীকে আসামি করে তিনটি মামলা দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে আজ সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তল্লাশি চালায় পুলিশ। দুপুরে ওই কার্যালয়ে যেতে গেলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গেল মোড় থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল চারটার দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক যান চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হলেও ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বিকেলে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় গণসমাবেশ করবেন তাঁরা। তবে এর মধ্যে গ্রহণযোগ্য বিকল্প জায়গার প্রস্তাব দেওয়া হলে বিবেচনা করবেন।
এমন সংঘাতময় পরিস্থিতিতে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সরকারি কর্তৃপক্ষগুলোর প্রতি সহিংসতার ঘটনা তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে নাগরিকদের বাক্স্বাধীনতা, সভা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার মৌলিক অধিকার রক্ষায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপের ঘটনা নিয়ে তাঁর দেশ উদ্বিগ্ন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আইনের শাসনের প্রতি সম্মান দেখাতে এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকতে আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানাই।’