বিশ্লেষণ

নজরদারি নেই, ব্যাটারির অ্যাসিডে বাড়ছে সহিংসতা

সৌরবিদ্যুৎ, রিকশা ও যানবাহনে ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। এসব ব্যাটারির ডাইলুট অ্যাসিড অনেকটা সহজলভ্য। সালফিউরিক অ্যাসিডের মতো এই অ্যাসিডের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এই ডাইলুটেড অ্যাসিডে নেই। ফলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এখন এই অ্যাসিডের ব্যবহার বেশি দেখা যাচ্ছে।

সাদিয়া আক্তার (২০) মাস তিনেক আগে তাঁর স্বামীর কাছে বিবাহবিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান। আরেকটি বিয়ের প্রস্তুতি ছিল তাঁর। এতে ক্ষুব্ধ সাবেক স্বামী সুমন শিকদার (২৬) তাঁর মুখ ও শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেন। গত ১৬ আগস্ট মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় সাদিয়ার মায়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় করা মামলার তদন্ত করছেন শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইজারত হোসেন। গত ৬ সেপ্টেম্বর কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি অ্যাসিডের উৎস সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রথম আলোকে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে সুমন তাঁদের বলেছিলেন, বাসার সোলার প্যানেলের ব্যাটারি কেটে তিনি অ্যাসিড সংগ্রহ করেন।

মায়ের সঙ্গে বিরোধের জেরে গত ২৩ জুন সৎবাবা খোকন মিয়া অ্যাসিডে দগ্ধ করেন শিশু মারিয়া আক্তারকে (৮)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (বদলি হয়ে অন্যত্র গেছেন) আড়াইহাজার উপজেলার গোপালদী তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক ফজলুল হক প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে খোকন মিয়া ট্রাকের ব্যাটারি থেকে অ্যাসিড সংগ্রহ করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

শুধু ট্রাক নয়, আটজনের বসার মতো ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ সব ধরনের যানবাহন এবং অন্যান্য অনেক কিছুর ব্যাটারিতে ডাইলুটেড অ্যাসিড ব্যবহৃত হয়। সাতক্ষীরায় অ্যাসিড–সহিংসতার এক ঘটনায় মাইকের ব্যাটারি থেকে অ্যাসিড সংগ্রহ করা হয়েছিল।

সম্প্রতি সংঘটিত বেশ কয়েকটি অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নানা সহিংস ঘটনায় ব্যাটারির অ্যাসিড ব্যবহার করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা অ্যাসিড–সহিংসতা কমে আসার সাফল্যকে ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে। কারখানা, সোনার দোকানে ব্যবহৃত ঘনীভূত অ্যাসিডের (সালফিউরিক অ্যাসিড) ওপর সরকারের যে নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, ব্যাটারির অ্যাসিডে তা নেই।

ম্যাগনাস পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের দেশীয় ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহফুজুল কবির প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন, সোলার প্যানেলে লিড অ্যাসিড ব্যাটারিতে ব্যবহৃত হলে সেটি ভেঙে অ্যাসিড বের করা সম্ভব। গ্রামাঞ্চলে সোলার প্যানেলে লিড অ্যাসিড ব্যাটারি বেশি ব্যবহৃত হয়। এই অ্যাসিড ডাইলুটেড বা পানিমিশ্রিত।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও নিশ্চিত করেছেন, ব্যাটারির অ্যাসিড ছোড়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা তাঁর নজরে এসেছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুষ্ট লোকেরা সহিংস ঘটনায় ডাইলুটেড অ্যাসিড ব্যবহারের চেষ্টা করছে। যানবাহনের ব্যাটারির অ্যাসিড ছুড়ে মারার তথ্য আমরা পাচ্ছি। এখন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বেড়েছে। এগুলো এত ছড়ানো–ছিটানো যে নজরে রাখা কঠিন হয়ে গেছে। কীভাবে নজরদারি বাড়ানো যায়, তা দেখতে হবে।’

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুসারে, সারা দেশে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন–২০০২–এর আওতায় ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের জুলাই পর্যন্ত ২৩৮টি মামলা হয়েছে।

পোড়ার ধরন আলাদা

মাদারীপুরের অ্যাসিডদগ্ধ সাদিয়া রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। ঘটনার ১২ দিন পর গত ২৮ আগস্ট হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় এই প্রতিবেদকের।

দেহের ২৭ শতাংশ দগ্ধ হয়ে তিনি ওই সময় হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) পরে সাদিয়ার শয্যার পাশে গিয়ে দেখা যায়, তাঁর সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। মুখে পোড়া দাগ। তবে চামড়া গলে যায়নি। নাকে নল লাগানো। যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন।

সাদিয়ার মা নূরজাহান বেগম বলেন, তিন বছরের সংসারে সাদিয়ার একটি মেয়ে আছে।

সাদিয়ার মতো পোড়া দাগ একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশু মারিয়ারও। গত ২ জুলাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, মারিয়ার চোখ ও মুখমণ্ডলের বড় অংশজুড়ে পোড়ার চিহ্ন, তবে চামড়া গলে গভীর ক্ষত তৈরি হয়নি। ওই সময় খোকন মিয়া প্রথম আলোর কাছে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন প্রথম আলোকে বলেন, ঘনীভূত অ্যাসিডে (সালফিউরিক অ্যাসিড) দগ্ধ ব্যক্তির চামড়া, মাংস, টিস্যু ও হাড় পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন অ্যাসিড–সহিংসতার শিকার হয়ে কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন, যাঁরা ব্যাটারির অ্যাসিডে পুড়েছেন। এই অ্যাসিডেও অনেক ক্ষতি হয়, চামড়া ও মাংস পুড়ে যায়।

রাজধানীর শ্যামলীতে ব্যাটারির অ্যাসিড বিক্রি হয় এমন দুটি দোকানে গত ৬ সেপ্টেম্বর কথা হয় বিক্রেতাদের সঙ্গে। এর মধ্যে আউয়াল মোটরসের কর্মী দেলোয়ার বলেন, ব্যাটারি সঙ্গে করে না আনলে তাঁরা ডাইলুটেড অ্যাসিড বিক্রি করেন না।

আগের মতো ঘনীভূত অ্যাসিডও সহিংসতায় ব্যবহৃত হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র গাইবান্ধার আসাদ মণ্ডলের ওপর পারিবারিক দ্বন্দ্বে সালফিউরিক অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়। সরাসরি দেখা যায়, অ্যাসিডে আসাদের মাথা ও মুখের ডান পাশ, ঘাড়, পিঠ, বুক, ঠোঁট ও হাতে গভীর ক্ষত। চোখের পাতা পুড়ে যাওয়ায় চোখ বন্ধ করতে তাঁর কষ্ট হচ্ছে।

আসাদের অভিযোগ, দাদার জমি বিক্রির ৪৬ লাখ টাকা নিয়ে বাবা ও চাচার দ্বন্দ্বে গত বছর তাঁদের দুই ভাইয়ের ওপর অ্যাসিড ছুড়ে মারেন চাচা-চাচি ও চাচির ভাই।

গত বছর মানিকগঞ্জের সাথী আক্তার (১৮) ও চট্টগ্রামের মোহাম্মদ সাদেক অ্যাসিডদগ্ধ হয়ে মারা যান।

অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের (এএসএফ) তথ্য অনুসারে, ১৯৯৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৪ বছরে ৩ হাজার ৮৭০ জন অ্যাসিডদগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের ৬০ শতাংশই নারী। ১৯৯৯ সালে ১৬৮ জন অ্যাসিড সহিংসতার শিকার হন। ২০০২ সালে সর্বোচ্চ ৪৯৬ জন অ্যাসিডে দগ্ধ হন। নতুন আইন কার্যকরের পর ২০০৩ সাল থেকে অ্যাসিড নিক্ষেপের ঘটনা কমতে শুরু করে। তবে ২০১১ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যা ১০০–এর বেশি ছিল।

এখন অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে সারা দেশের প্রায় ৬০০ মামলা বিচারাধীন। ইতিমধ্যে ১৪ জনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কারও ফাঁসি কার্যকর হয়নি।

সাজা কঠোর, প্রয়োগ কম

অ্যাসিড–সহিংসতার মামলার বিচারকাজ পরিচালনার করতে প্রতিটি জেলায় একটি করে ‘অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল’ রয়েছে। জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই ট্রাইব্যুনালের বিচার হয়। ৯০ কর্মদিবসের মধ্যে এসব মামলার বিচারকাজ শেষ করার বিধান থাকলেও তা প্রতিপালন করা হয় না।

অ্যাসিড–সহিংসতার শিকার আসাদ মণ্ডল হতাশা প্রকাশ করে প্রথম আলোকে বলছিলেন, প্রায় এক বছর হয়ে গেছে, তাঁর মামলায় এখনো সাক্ষ্য গ্রহণই শুরু হয়নি।

অ্যাসিডে দগ্ধ হয়ে ২০১২ সালে মারা যায় কুমিল্লার মাদ্রাসাছাত্রী ফারজানা আক্তার (১৫)। নিম্ন আদালত ২০১৭ সালে প্রধান আসামি সাদ্দামকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয় সহযোগীকে খালাস দেন। ফারজানার স্কুলশিক্ষক ভাই জিসান আহমেদ আক্ষেপ করে বলেন, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিট করলে সাদ্দাম এবং অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। সাদ্দাম শুরু থেকেই পলাতক। আর বাকি দুই আসামি ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শেখেরটেকে এএসএফ কার্যালয়ে কিশোর ছেলের হাত ধরে ফলোআপ চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন ঠাকুরগাঁওয়ের অ্যাসিডদগ্ধ মো. শামসুল হক (৪০)। তিনি বলেন, ২০০৭ সালে বন্ধুর সঙ্গে দ্বন্দ্বের দুই দিন পর ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি অ্যাসিডদগ্ধ হন। দুটি চোখ হারান। মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি বলে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।

ঢাকা জেলার অ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বিমল সমদ্দার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, আদালতে বিচারকাজ শুরুর আগে মামলার তদন্ত ও অভিযোগপত্র গঠনেও দীর্ঘ সময় চলে যায়। আবার বিচারকাজ শুরুর আগেই অনেক মামলা সমঝোতা হয়ে যায়। অনেকে দীর্ঘসূত্রতার কারণে মামলায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

‘অ্যাসিড অপরাধ দমন আইন–২০০২’–এর (ক) ও (খ) ধারায় ক্ষতির ধরন অনুযায়ী এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, সর্বোচ্চ ১৪ ও সর্বনিম্ন ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

অ্যাসিড সারভাইভারস ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনালের (এএসটিআই) তথ্য অনুসারে, বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর দেড় হাজারের মতো অ্যাসিড–সহিংসতার মামলা হয়। প্রকৃত ঘটনা এর চেয়ে অনেক বেশি। ৬০ শতাংশ ঘটনার ক্ষেত্রেই কোনো মামলা হয় না।

তৎপরতা কমে গেছে

গত ৫ ও ৭ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অন্তত ১০ কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেও অ্যাসিড–সহিংসতার মামলার বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়নি। অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ আইন–২০০২–এর অধীনে গঠিত ২৬ সদস্যের জাতীয় অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ পরিষদের চেয়ারম্যান, কো–চেয়ারম্যান ও সদস্য হচ্ছেন এই তিন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব।

তিন মাস পরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এই পরিষদের সভা অনুষ্ঠানের কথা। কিন্তু গত পাঁচ বছরেও কোনো সভা হয়নি। ২০১৯ সালে সর্বশেষ অনুষ্ঠিত সভায় ২০০২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ১৬৯টি মামলার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়েছিল, সাজা হয়েছে মাত্র ৯ ভাগ মামলায়। ৮৬৬টি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। খালাস পেয়ে গেছেন ১ হাজার ৯৫০ আসামি।

সর্বশেষ সভায় যোগ দিয়েছিলেন এএসএফের তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক সেলিনা আহমেদ। ৯ সেপ্টেম্বর তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এত মামলায় কেন চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে, তা খতিয়ে দেখে পরবর্তী সভায় উপস্থাপনের কথা ছিল। এরপর আর বৈঠকই হয়নি।

আবার জেলা অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ পরিষদের সভা দুই মাস পর পর হওয়ার কথা থাকলেও আলাদাভাবে সেই সভা হচ্ছে না।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে মাসিক সভায় অ্যাসিড নিয়ে আলোচনা হয়। কারণ, আইনশৃঙ্খলা কমিটিতে যাঁরা আছেন, তাঁরাই অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ কমিটির সদস্য। তাই বারবার একই ব্যক্তিদের আলাদা সভার জন্য সময় বের করা কঠিন হয়। এ কারণে একসঙ্গে তাঁরা পাঁচ–ছয়টি বিষয় নিয়ে সভা করেন।

অ্যাসিড–সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রচার ও অ্যাসিডদগ্ধ ব্যক্তিদের সহায়তায় ২০০০ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে কাজ করছে প্রথম আলো। ওই সময় প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা এক দিনের বেতন দিয়ে একটি তহবিল গঠন করেছিলেন। পরে এই তহবিলে সমাজের নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।

বেসরকারি যেসব সংগঠন আগে অ্যাসিড–সহিংসতার বিরুদ্ধে সক্রিয় ছিল, তহবিল–সংকটে তারা কাজ সীমিত করে ফেলেছে।

এএসএফও তহবিল–সংকটে ভুগছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সরদার জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে অ্যাসিড সহিংসতার ঘটনা বেশি ঘটেছিল।

আইন কার্যকরের পর সহিংসতা কমে গেছে। তবে এখন অ্যাসিড-সহিংসতা প্রতিরোধে নজরদারি কমে গেছে। নজরদারি না বাড়ালে এই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এখন সহিংসতার অন্যতম উৎস হিসেবে ব্যাটারির অ্যাসিড ব্যবহৃত হচ্ছে। অনেকটা সহজলভ্য এই অ্যাসিড–সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ব্যাটারির অ্যাসিডের মেয়াদ শেষ হলে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিসাইকেল করতে এই ব্যাটারি ফিরিয়ে নিলে এটি আর সহজলভ্য থাকবে না। এতে সহিংসতা কমতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যাটারি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে করণীয় ঠিক করতে আলোচনায় বসতে পারে। তাহলে উৎপাদনকারীদের মধ্যেও সচেতনতা বাড়বে।