চালককে মারধরের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান ও কক্সবাজার সড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আজ রোববার সকাল ছয়টায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকেরা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন শত শত যাত্রী।
বেলা ১১টায় শাহ আমানত সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বান্দরবান ও কক্সবাজার সড়কে চলাচল করা কয়েক শ বাস সড়কের পাশে পড়ে আছে। চালক, চালকের সহকারীরা সড়কের ওপর বিক্ষোভ করছেন। কোনো বাস চলাচল করেনি।
সেতু এলাকায় কথা হয় বাসচালক মো. আলী আজগরের সঙ্গে। তাঁর দাবি, আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুছার নির্দেশে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে তিনি আমিরাবাদে সড়কের এক পাশে হেঁটে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে একটি বাসে ওঠেন। ওখানে ছয়জন ছিলেন। তাঁর বাসের দরজা লাগিয়ে দেন। তাঁকে জোর করে দোহাজারি নিয়ে যান। সেখানে আরও ছয়জন মিলে তাঁকে মারধর করা হয়। মূলত পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয়েছে।
আলী আজগরের অভিযোগ, মোহাম্মদ মুছাসহ পুরো কমিটি পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি করছে। ফলে কমিটি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
জানতে চাইলে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের মধ্যে ভুল–বোঝাবুঝি হয়েছে। তাঁরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সকাল ১০টার দিকে কথা বলার জন্য মোহাম্মদ মুছা শাহ আমানত সেতু এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এরপর মোহাম্মদ মুছাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করে নিয়ে যান।
কক্সবাজার যাওয়ার জন্য সকাল ১০টায় সেতু এলাকায় এসেছিলেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা নোমান মাহবুব। বাস না পাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মাহবুব বলেন, বাংলাদেশ এখন দাবির রাষ্ট্র হয়ে গেছে। যিনি যেভাবে পারছেন, দাবি তুলছেন। সবকিছু অচল করে দিচ্ছেন। বাস চলাচল বন্ধ রেখে যাত্রীদের বিপদে ফেলছেন।
কেরানিহাট যাওয়ার জন্য সকাল আটটায় ঘর থেকে বের হন সুলতানা সুমাইয়া জাহিন। বাস না পেয়ে সড়কের এক পাশে বসে ছিলেন তিনি। সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ কাজে তিনি বাড়ি যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন। কিন্তু বাস না পেয়ে বিপদে পড়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে এ রকম আরও অর্ধশতাধিক যাত্রীদের দেখা গেছে। তাঁরা কেউ যাবেন বান্দরবান, কেউ কক্সবাজার, কেউ আবার লোহাগাড়া। বাস চলাচল না করায় সবাই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।